সন্তান অনলাইন গেমে, দুশ্চিন্তায় মা–বাবা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিশু, কিশোর ও তরুণদের অনেকেরই সময় কাটছে গেম খেলে। গেম আসক্তিকে রোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনাকালে মুঠোফোনে গেম খেলার প্রবণতা বেড়েছে শিশু-কিশোরদের মধ্যে। গতকাল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে।
ছবি: কবির হোসেন

কিশোরটির বয়স ১৬ বছর। দিনের বেশির ভাগ সময় সে ব্যস্ত থাকে অনলাইনে গেম খেলায়। শুরুতে তার মা–বাবা বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবেই নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেল, গেম খেলতে না পারলে সে ঘরে ভাঙচুর শুরু করে। কখনো কখনো মা–বাবাকে আঘাত করতেও তার দ্বিধা হয় না।

এই কিশোরকে নিয়ে তার অভিভাবকেরা গিয়েছিলেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজির আহম্মদের কাছে। তিনিই প্রথম আলোকে জানান এই ঘটনা।

রাজশাহীর পরিবারটি যেমন সন্তানের অনলাইনে গেম খেলার আসক্তি নিয়ে সংকটে পড়েছে, তেমনি দেশের অনেক পরিবারে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। শিশু, কিশোর ও তরুণদের অনেকে দিনের বড় একটা অংশ এখন মুঠোফোন বা কম্পিউটারে গেম খেলে কাটাচ্ছে। এ কারণে তাদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, চোখের ওপর চাপ পড়ছে এবং শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তরুণদের অনেকে সারা রাত জেগে গেমে ব্যস্ত থাকছেন।

অনলাইন গেমারদের একাংশ গেম খেলার জন্য বেশি সক্ষমতা বা স্পেসিফিকেশনের দামি মুঠোফোন ও কম্পিউটার কিনে দেওয়ার জন্য পরিবারের ওপর চাপ তৈরি করে। একাংশ গেম খেলতে টাকা ব্যয় করে, যা পরিবারের ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। একাংশ অভিভাবকদের কথা শোনে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মনোবিদেরা বলছেন, কেউ কেউ সহিংসতাপূর্ণ গেম খেলে সহিংসতা বা জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

অবশ্য সাধারণভাবে এটি নিছক বিনোদন ও সময় কাটানোর মাধ্যম। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসলিমা হোসেনও সময় কাটানোর জন্য অনলাইন গেমে ঝুঁকেছিলেন। করোনাকালে কাজ তেমন কিছু নেই। করোনা সংক্রমণের শুরুর আগে দিনের বেশির ভাগ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটত। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হতো।

তাসলিমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই। বাসায় অফুরন্ত সময়। তাই বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে গেম খেলার দিকে ঝুঁকে পড়েছিলাম। একসময় দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা গেম খেলা হতো। ইদানীং চোখ ও মাথাব্যথা হয় বলে বেশি খেলা হয় না।’

করোনাকালে গেম খেলা বেড়েছে

অনলাইনে গেম খেলা নতুন কিছু নয়। বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। তবে দেশে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে করোনাকালে। এখন শহরে শিশু, কিশোর ও তরুণদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনলাইনে ক্লাস করতে হয়। এর ওপর আরও কয়েক ঘণ্টা করে গেম খেলে কাটে।

করোনাকালে ইন্টারনেটের ব্যবহারও বেড়েছে। ক্লাস করার জন্য অভিভাবকেরা সন্তানকে স্মার্টফোন কিনে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ কিনে দিয়েছেন ট্যাব, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার। সঙ্গে নিয়েছেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ। এতে করোনার মধ্যে ক্লাসের সুযোগ যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি নাগালে এসেছে অনলাইন গেম।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে, ২০২০ সালের জানুয়ারির তুলনায় দেশে গত মে মাস শেষে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১ কোটি ৮১ লাখের মতো বেড়েছে। সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৭৩ লাখে। এ সময় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বেড়েছে ৮৩ শতাংশ। দাঁড়িয়েছে ৯৮ লাখে।

বাংলাদেশে কত শিশু, কিশোর ও তরুণ অনলাইনে গেম খেলে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। বড় কোনো গবেষণাও পাওয়া যায়নি। বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক গবেষণা বলছে, দেশে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বিভিন্ন ডিজিটাল গেম খেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনে দু–তিন ঘণ্টা গেম খেলে কাটানোর প্রবণতা রয়েছে। এই গবেষণায় নমুনা হিসেবে ছিলেন ৮০ জন শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি চাকরিজীবী এক তরুণ, যিনি অনলাইনে গেম খেলায় আসক্ত ছিলেন, তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন দেখা যাচ্ছে অনেকেই গেম খেলছে। আগে মেয়েরা তেমন একটা খেলত না। তাদের সংখ্যাও বেড়েছে।

দেড় লাখ কোটি টাকার বাজার বিশ্বে

গেমের বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান নিউজুর বরাত দিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড–এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে অনলাইন গেমিংয়ের বাজার দাঁড়াবে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার সমান। করোনাকালে গেমের বাজার কতটা বেড়েছে, তা উঠে আসে ‘আমেরিকান বিজনেস রিসার্চ ফার্ম’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে। এতে বলা হয়, করোনার সংক্রমণ শুরুর পর গেমের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ।

শিশু–কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত অ্যাপ কাস্টোডিও করোনাকালে গেমিংয়ের হার কতটা বেড়েছে, তা বুঝতে গত বছর যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনে ৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী কয়েক হাজার শিশু-কিশোরের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ ‘ট্র্যাক’ করে। এতে প্রতিষ্ঠানটি দেখতে পায়, করোনাকালে অনলাইনে শিশু–কিশোরদের সময় কাটানোর পরিমাণ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। কাস্টোডিওর জরিপে দেখা গেছে, ২০১৯-এর তুলনায় ২০২০ সালে শিশু-কিশোরেরা ইউটিউবে ৫০ শতাংশ বেশি ভিডিও দেখেছে। এক বছরের ব্যবধানে ২০২০ সালে রোব্লক্স গেম দেখেছে ২৩ শতাংশ বেশি। ফোর্টনাইট গেম দেখেছে ২০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশেও অনলাইন গেমের বাজার বাড়ছে। নিউজুর হিসাব বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ ভিডিও গেমের বাজারে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।

গেম আসক্তি রোগের তালিকায়

দীর্ঘদিন জরিপ আর গবেষণার পর ২০১৮ সালের জুনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্যাসিফিকেশন অব ডিজিজের ১১তম সংশোধিত সংস্করণে (আইসিডি-১১) অনলাইন গেমিং আসক্তিকে মানসিক সমস্যা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই অনলাইন গেম, মুঠোফোন, কম্পিউটার বা ভিডিও গেমের আসক্তিকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বাংলাদেশের মনোবিদেরা বলছেন, অনলাইন গেম স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব না ফেললে তা উদ্বেগের নয়। টিভি দেখা, ফেসবুকিং করা, গান শোনা বা বই পড়ার মতোই সেটি আর দশটি স্বাভাবিক বিনোদনের মাধ্যম। তবে অনলাইন গেম যদি দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে, তখন সেটি আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছায়।

বেশি খেলা হয় সহিংসতার গেম

দেশে তরুণদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয় ফ্রি ফায়ার, পাবজি, ক্লাস অব ক্ল্যানস, মাইন ক্র্যাফট, কাউন্টার স্ট্রাইক গ্লোবাল অফেন্স, কল অব ডিউটি ওয়ার জোনের মতো সহিংসতাপূর্ণ গেম। এসব গেমে অস্ত্রের ব্যবহার, মেরে ফেলা ও বোমাবাজি রয়েছে। সহিংসতাপূর্ণ গেম খেলে শিশু–কিশোরেরা পরবর্তী সময়ে সহিংস আচরণ করে কি না, তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেক গবেষণা হয়েছে।

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের দুটি গবেষণায় দুটি ফলাফল দেখা যায়। একটিতে দেখা যায়, যাদের মধ্যে সহিংসতাপূর্ণ মনোভাব থাকে, তারা এসব গেম খেলে সহিংস আচরণ করতে পারে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, এ ধরনের ভিডিও গেম সাময়িক সময়ের জন্য হলেও সহিংস আচরণ উসকে দিতে পারে।

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে গবেষণা দুটির ফল নিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে মনোবিদ ক্রেইগ এ অ্যান্ডারসনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, এ ধরনের গেম বিরোধ পরিস্থিতির সহিংস সমাধান শেখায়। বাস্তব জীবনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সহিংস হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়।

মানসিক জটিলতার পাশাপাশি রয়েছে শারীরিক সমস্যার শঙ্কাও। দেশের শিশু চক্ষুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকালে ঘরে থাকা শিশুদের ক্ষীণ দৃষ্টি অথবা দূরে দেখার ক্ষমতা কমে যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে। সমস্যাটির নাম মায়োপিয়া। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মেডিকেল জার্নাল জ্যামা অফথালমোলজিতে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘২০২০-এ ইয়ার অব কোয়ারেন্টিন মায়োপিয়া’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে ছয় থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের মায়োপিয়ার হার আগের চেয়ে ১ দশমিক ৪ থেকে ৩ গুণ বেড়েছে।

ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের শিশু চক্ষুরোগ ও স্কুইন্ট (ট্যারা) বিভাগের প্রধান মো. মোস্তফা হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, একনাগাড়ে দীর্ঘ সময় মুঠোফোনের মতো ডিভাইসের দিকে তাকিয়ে থাকলে শিশুদের চোখে চাপ পড়ে। মাথাব্যথা হয়। এ থেকে দৃষ্টিত্রুটি দেখা দিতে পারে।

পাবজির মতো গেম খেলতে উচ্চ স্পেসিফিকেশনের মুঠোফোন ও কম্পিউটার প্রয়োজন হয়। এর দাম বেশি। এ ছাড়া গেমেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা লাগে। কী কারণে টাকা লাগে এবং তা কীভাবে পরিশোধ করতে হয়, তা জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গেমার। পাবজির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এই গেমে বিভিন্ন অস্ত্রের নানা রকম স্কিন বা উপরিভাগের রং থাকে। এটা কেনাটা গেমারদের জন্য একটা দেখানোর বিষয়। আগে এগুলো অনলাইনে বিভিন্ন এজেন্টকে টাকা দিয়ে কিনতে হতো। এখন তো কোনো কোনো মোবাইল অপারেটর মুঠোফোনের ব্যালান্স (স্থিতি) থেকে কেনার সুযোগ দেয়।

সব গেমই কি ক্ষতিকর

অনলাইন গেমিং মানেই আসক্তি না–ও হতে পারে। গেম তৈরি করে, এমন দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, শুধু সহিংসতাপূর্ণ গেমই বেশি জনপ্রিয়, এমন ঢালাও ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়।

দেশীয় অ্যাপ ও গেম ডেভেলপার এমসিসি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী আশরাফ আবীর বলেন, কার্টুন চরিত্র মীনার ওপর তাঁদের তৈরি ১২ পর্বের গেম ২০ লাখের বেশি ডাউনলোড হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, সামাজিক আচরণ–সংশ্লিষ্ট গেমের বিষয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক গেমের চাহিদা তো রয়েছেই।

একসময় দলবেঁধে লুডো, ক্যারম ও তাস খেলার অভ্যাসের এখন ডিজিটাল রূপান্তর ঘটেছে বলে মনে করেন উলকা গেমস লিমিটেড নামের একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জামিলুর রশীদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অ্যান্ড্রয়েড ফোনে লুডো ক্লাবের ডাউনলোড ১০ কোটির বেশি। দেশে এত সব গেমের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় বাংলাদেশি ডেভেলপারের তৈরি ‘হিরোজ অব সেভেন্টি ওয়ান’ নামের গেমটি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই গেম ৪০ লাখের বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে।

‘বই পড়াকে উৎসাহ দিন’

বাংলাদেশে গেমে আসক্তি নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন। দেশে নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী অনলাইন গেম না থাকাকেও একটি ঘাটতি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশি গেম কম থাকায় তরুণেরা পাবজি, সাবওয়ে সার্ফারস, হাই হিলসের মতো বিকল্প গেমিংয়ে ঝুঁকে পড়ছেন।

গেমে আসক্তির বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ভিন্নমত প্রকাশ করে মইনুল হোসেন আরও বলেন, শিশু–কিশোরদের খেলায় একধরনের নেশা থাকে। পুকুরে নামলে বা মাঠে খেলতে গেলে তারা সহজে ফিরতে চায় না। এ ক্ষেত্রে যেমন অভিভাবকেরা তদারকি করতেন, তেমন অনলাইন গেমেও তদারকি দরকার।

প্রাপ্তবয়স্কদের গেমগুলোতে যাতে অপ্রাপ্তবয়স্করা ঢুকতে না পারে, সে জন্য মুঠোফোন ও অন্যান্য ডিভাইসে অভিভাবকের নিয়ন্ত্রণ বা প্যারেন্টিং কন্ট্রোল সেটিংস অপশন থাকে। এ ছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগেও বিটিআরসি গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর নিয়ন্ত্রণ ও নিবন্ধন নীতিমালা কার্যকর করেছে। এর মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড সংযোগে বাবা-মায়েরা চাইলে শিশুরা কত সময়ে, কী কী ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করতে পারবে, তা বিনা মূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

মনোবিদ তানজির আহম্মদ মনে করেন, যেকোনো ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের শুরু থেকেই সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। শুধু তা–ই নয়, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে একান্তে এ ধরনের গেম বা ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ না দেওয়াই উচিত। তিনি বলেন, শিশু, কিশোর ও তরুণদের জন্য গেমের বিকল্প হিসেবে পাঠ্যবইয়ের বাইরে নানা ধরনের বই পড়া, বাগান করা, ঘরে বসে বিভিন্ন খেলার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা ও উৎসাহ দিতে অভিভাবকদের ভূমিকা নিতে হবে।