সেরামের সঙ্গে চুক্তি জি টু জি নয়, বাণিজ্যিক: বেক্সিমকোর এমডি

বাসায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নাজমুল হাসান
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

ভারতের সেরাম উৎপাদিত করোনাভাইরাসের টিকা দেশে আনা প্রসঙ্গে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘যে নিউজটার কথা উঠেছে, আমিও শুনেছি। আমি, আমরা এখনো এটি নিয়ে অত চিন্তিত না। কারণ, আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। চুক্তিতে পরিষ্কার বলা আছে, আমাদের দেশে অ্যাপ্রুভাল দেওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের (সিরাম) টিকা দিতে হবে। এটা একটা আন্তর্জাতিক চুক্তি।’

করোনার টিকার চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্য প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বলেন, ‘এখানে জি টু জির (বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের সরকার) কোনো প্রশ্নই ওঠে না। মানে আমার জানা নেই। আপনারা যে জি টু জির কথা বলছেন, স্বাস্থ্যসচিব বলেছেন, উনি কোন ভ্যাকসিনের কথা বলছেন, আমি জানি না। এটা হতে পারে অন্য ভ্যাকসিন।

গভর্নমেন্টের অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে থাকতেই পারে আমার জানা নেই।’ তিনি বলেন, ‘এটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি।...ব্যাংক গ্যারান্টি সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।

সরকারের এটা পৌঁছে দিতে হবে। এখন বাকি আছে রেজিস্ট্রেশন। দেশে রেজিস্ট্রেশন কবে পাবে। আমরা ডকুমেন্ট আগেই জমা দিয়েছি বৃহস্পতিবার। আজ আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে। এখন অনুমোদন কখন দেবে, তাদের ব্যাপার। এখন বাকি যেটা আছে সরকারের পক্ষ থেকে।’

নাজমুল হাসান বলেন, চুক্তি যেহেতু হয়ে গেছে, এটাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কারণ নেই। এটা নিয়ে আজ সেরামের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তারা এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি যে করোনার টিকা আসতে দেরি হতে পারে। সরকার যদি নিয়মকানুন মেনে দিয়ে দেয়, এক মাসের মধ্যে টিকা আসবে। এর নিয়ন্ত্রণের দিকটা বাংলাদেশ সরকারের ওপর নির্ভর করছে।

অনুমোদন পাওয়ার পর প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে করোনা টিকা দেওয়া যাবে উল্লেখ করে নাজমুল হাসান জানান, ‘এলসি বা অ্যাগ্রিমেন্ট যা হয়েছে, তা দিতেই হবে। ভারত সরকার যা বলেছে, তা লজিক্যাল, ওদের দেশের মানুষকে না দিয়ে রপ্তানি করা যাবে না। কিন্তু ভারত সরকার যা অ্যাপ্রুভাল দিয়েছে, ইমারজেন্সি ইউজ অথোরাইজেশন ফর ডমেস্টিক মার্কেট। এটা সব দেশে তাই লেখে। আমার ধারণা, ইট কুড বি ওয়ান ইন্টারপ্রিটেশন, এটা কেউ ভুল করছে। ওখানে কোথাও লেখা নেই যে এক্সপোর্ট করতে পারবে কি পারবে না। তবে এক্সপোর্টের ওপর একটি বার দিতেই পারে।’

নাজমুল হাসান জানান, ইতিমধ্যে করোনার টিকা পরিবহনের জন্য সাতটি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষায়িত কুল বাক্স আনা হবে। ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় গুদাম তৈরি করা হয়েছে।

নাজমুল হাসান আরও বলেন, ‘লজিক্যালি আমরা যে ব্যবসা করে আসছি, সেভাবে বলছি। এটা বাণিজ্যিক চুক্তি। আমরা শুধু সরকারকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘এত দিনে এটা বুঝে যাওয়া উচিত, বেক্সিমকো যদি বুকিং না দিত, তাহলে কী হতো। কোন কোম্পানি বা সরকার কোথায় বুকিং দিয়েছে। কোন ভ্যাকসিন এনেছে বা আনতে পারবে। আর যে দাম বলছি, এর ডাবল দামে যদি কেউ দিতে পারে, আমি চ্যালেঞ্জ করে দিলাম প্রশ্নই ওঠে না।’