স্বার্থান্বেষী মহলকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে সরকার

করোনার টিকা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে সরকার একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি কর্তৃক গঠিত ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনসংক্রান্ত’ কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, টিকা কিনতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বেসরকারি খাতে বেশি দামে চিহ্নিত কতিপয় মহলের কাছে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডোজ টিকা বিক্রি সরাসরি জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী বলেও দাবি করেন এই নেতা।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টিকা নিলে প্রায় অর্ধেক মূল্যে পাওয়া যেত। এর মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় হতো। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নেওয়ার কারণে এখন প্রতিটি ডোজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। শুধু একটি গোষ্ঠীকে আর্থিকভাবে লাভবান করতেই এ ধরনের চুক্তি করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, কোভিড-১৯–এর টিকা সংগ্রহে শুধু একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে খুশি রাখার জন্যই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও অনেক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও দেশ অনেক আগেই ভ্যাকসিন ট্রায়াল ও পরবর্তী সময়ে স্বল্পমূল্যে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেটি গ্রহণ করা হয়নি। যদি একাধিক প্রস্তাব গ্রহণ করা হতো, তাহলে টিকা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হতো না।

সংবাদ সম্মেলনে টিকা বিনা মূল্যে সরবরাহ করার দাবি জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই টিকা যাতে জনগণ সঠিকভাবে পায়, সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।

করোনার টিকা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও গতকাল তড়িঘড়ি করে করোনাভাইরাসের টিকা কেনার জন্য প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির এই নেতার দাবি, সেখানে রাখা হয়েছে বিশাল দুর্নীতির খাত।

খন্দকার মোশাররফের ভাষ্য, বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় থাকায় জণগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই। সরকারের অদূরদর্শিতা ও লুটপাট নীতির কারণেই টিকা নিয়ে আজ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার জন্য সরকারকে অনতিবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, মূল্য ও সংরক্ষণ এবং বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য জনগণের সামনে উপস্থাপনের জোর দাবি জানান এই নেতা।