‘রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা’ পেলেন চার নারী

‘রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা’ পাওয়া চারজন (বাঁ থেকে) সুমনা শারমিন, শাহনাজ পারভীন, শাহরিয়ার ফারজানা ও সুলতানা পারভিন লাভলীছবি: সাজিদ হোসেন

নারীদের ক্ষমতায়নের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি ঝরে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধে৵ শিক্ষার আলো ছড়ানোয় অবদান রেখে চলেছেন বগুড়ার শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। ‘প্রজেক্ট সেকেন্ড হোম’-এর মাধ্যমে প্রায় ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী নারীর জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য আবাসন নিশ্চিত করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা সুমনা শারমিন। সাতবার দেশের দ্রুততম মানবী, জাতীয় পর্যায়ে ৪৫টি স্বর্ণপদক, জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার, ২০টির বেশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন খুলনার অ্যাথলেট সুলতানা পারভিন লাভলী এবং ছবি তুলে ১৬৫টির বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোসাংবাদিক শাহরিয়ার ফারজানা। এই চার নারী পেলেন ‘রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২৩’।

সমাজকল্যাণ, সাংবাদিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ ও ক্রীড়া—এই চার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য দেওয়া হয় রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁদের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা ২০২৩ প্রাপ্ত নারীদের হাতে ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন বরেণ্য অভিনেত্রী দিলারা জামান, সৌন্দর্যচর্চা প্রতিষ্ঠান পারসোনার প্রধান নির্বাহী কানিজ আলমাস খান, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট এবং দৈনিক সমকালের সম্পাদক আলমগীর হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো.পারভেজ সাইফুল বলেন, নারীর অগ্রযাত্রার পথ ধরেই পৃথিবী এগিয়েছে। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে সবাই মিলে। এ জন্য নারীর অধিকার আদায়ে বিনিয়োগ করতে হবে। এ সময় তিনি জানান, নারীর কাজকে স্বীকৃতি দিতে দেড় যুগ ধরেই কীর্তিমতী সম্মাননার আয়োজন করা হচ্ছে।

নাট্যজন দিলারা জামান বলেন, কীর্তিমতীরা যে সম্মাননা পাচ্ছেন, এর পেছনে রয়েছে তাঁদের ত্যাগ ও নিষ্ঠা। যা সবার জন্য অনুসরণীয়। এ সময় তিনি নিজের কাজ শুরুর সময়ের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও লড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। দিলারা জামান জানান, তিনি যখন নাটকে অভিনয় শুরু করেছিলেন, তখন একজন মুসলিম নারী হিসেবে কাজ করা খুব কঠিন ছিল।

এমন সম্মাননা নারীকে সামনে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয় বলে উল্লেখ করেন কানিজ আলমাস। সাংবাদিক আলমগীর হোসেন এবং ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলটের বক্তব্যেও উঠে আসে নারীর অগ্রযাত্রার জন্য অধিকার আদায়, আইনের ন্যায়বিচারসহ অনেক বিষয়, যেগুলোতে এখনো কাজ করতে হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

সম্মাননা গ্রহণের পর নিজেদের অনুভূতির কথা জানান কীর্তিমতী নারীরা। তাঁদের সবার বক্তব্যে উঠে আসে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হেরে না যাওয়ার কথা। পরিবারের সমর্থন কতখানি জরুরি, এ বিষয়ে উল্লেখ করেন তারা।

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে মঞ্চে আহ্বান করা হয় ‘রাঁধুনী কীর্তিমতী সম্মাননা-২০২৩’–এর নির্বাচকদের। এবারের নির্বাচন প্যানেলের সদস্য ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গুটিপার পরিচালক তাসলিমা মিজি, দৈনিক ‘দেশ রূপান্তর’ সম্পাদক মোস্তফা মামুন এবং প্রযুক্তিসেবা প্রতিষ্ঠান ডিক্যাস্টালিয়ার পরিচালক সাবিলা ইনুন। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চে সমবেত দলের নৃত্য পরিবেশনা নিয়ে আসেন অভিনেত্রী তারিন জাহান।