রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা বড় চ্যালেঞ্জ: আইওএমের মহাপরিচালক

আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ।ফাইল ছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বলেছেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিয়ে জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, মিয়ানমারে শান্তি স্থাপনের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান হতে পারে। শান্তি স্থাপন না হলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠালে সেটা নিরাপদ হবে না।  

অ্যামি পোপ বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরের নারী ও শিশুরা ব্যাপক অনিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, রাতে ঘুমানোর সময় তাদের ঘর বন্ধ করার ব্যবস্থাও নেই। তা ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নারী ও শিশু পাচার ঠেকানোর মতো যথেষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই বলেও উল্লেখ করেন অ্যামি পোপ।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি সংরক্ষণের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আইওএমের মহাপরিচালক জানান, এরই মধ্যে রোহিঙ্গা সংস্কৃতি সংরক্ষণে একটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যা রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চায় সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অ্যামি পোপ বলেন, চলমান যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে দাতা সংস্থাগুলো ক্রমেই মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে দৃষ্টি হারাচ্ছে। তা ছাড়া দাতা সংস্থাগুলো ফিলিস্তিন আর ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী মানবিক সাহায্য অব্যাহত রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এখন যদি দাতারা তাদের সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের না খেয়ে থাকতে হবে। এ পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই যাতে রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য বন্ধ না হয়ে যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে আইওএম।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে আইওএমের মহাপরিচালক বলেন, কেউই বাস্তুচ্যুত হয়ে থাকতে চায় না। শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার আলোচনা তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার শামিল।

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বৈধভাবে অভিবাসন নিশ্চিতের বিষয়েও আলোচনা করেছি। আর সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিবাসন নিয়ে যে সমঝোতা করতে যাচ্ছে, তাকে স্বাগত জানাই। ইউরোপ বাংলাদেশকে সম্ভাব্য শ্রম সংগ্রহের দেশ হিসেবে বিবেচনা করছে। তাই তো তারা এখানে বিনিয়োগ করছে।’

৫ মে পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। বৃহস্পতিবার তাঁর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।