কখনো গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, কখনো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), আবার কখনো র্যাব সদস্য হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি। ক্রসফায়ার থেকে বাঁচানোর কথা বলে মানব পাচার মামলার এক আসামির পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনায় মামলা হলেও দেড় বছর দিব্যি গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি গিয়াস উদ্দিন (৪০) নামের ওই ব্যক্তির। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের সেতুভাঙ্গা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার গিয়াস আট বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন। এরপর থেকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। দুই বছর আগে হালিশহর থানার মানব পাচার আইনের একটি মামলায় মো. আকবর নামের এক ব্যক্তিকে সিআইডি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর গিয়াস নিজেকে সিআইডির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আকবরের পরিবারের সদস্যদের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দেওয়া না হলে আকবরকে ক্রসফায়ারে মারার হুমকি দেন। ভয়ে আকবরের পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ১০ লাখ টাকা দেন।
সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আকবর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি সিআইডিকে জানান। সিআইডিতে গিয়াস নামের কোনো কর্মকর্তা নেই জানার পর আকবর ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর হালিশহর থানায় প্রতারণার মামলা করেন। এই মামলায় গিয়াসের বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা রয়েছে।
কুতুব উদ্দিন বলেন, গিয়াসের বিরুদ্ধে করা প্রতারণা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিলমোহরসহ একটি চিঠি সিআইডি চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আসে। পরে তদন্ত করে দেখা যায় এটিও ভুয়া। এই ঘটনায় সিআইডি চট্টগ্রামের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের খুলশী থানায় গিয়াসকে আসামি করে ২০১৬ সালের ১৪ জুন আরেকটি মামলা করেন।
গ্রেপ্তার গিয়াস প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান সিআইডি চট্টগ্রামের পরিদর্শক ইকবাল বাহার। তিনি বলেন, আজ শুক্রবার আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে।