গুলি ছুড়েছেন চাকরিচ্যুত এএসআই

কুষ্টিয়া শহরে জাতীয় শোক দিবসে জেলা আওয়ামী লীগের শোক র‌্যালি শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষের একপর্যায়ে আনিচুর রহমান ওরফে আনিচকে শটগান দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। ছবি: ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া
কুষ্টিয়া শহরে জাতীয় শোক দিবসে জেলা আওয়ামী লীগের শোক র‌্যালি শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষের একপর্যায়ে আনিচুর রহমান ওরফে আনিচকে শটগান দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। ছবি: ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া

কুষ্টিয়ায় জাতীয় শোক দিবসের র‍্যালি শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় যে ব্যক্তিকে ভিডিও ফুটেজে শটগানের গুলি ছুড়তে দেখা গেছে, তাঁর নাম আনিচুর রহমান ওরফে আনিচ। তিনি ছিলেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। প্রায় দেড় বছর আগে ঢাকার পল্লবী থানায় থাকাকালে ফেনসিডিল আত্মসাতের দায়ে তিনি চাকরিচ্যুত হন।
এর পর থেকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঢাকা ঝালুপাড়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন মণ্ডলের ছেলে আনিচ গ্রামেই থাকতেন।
তাঁর গ্রামের দুজন বাসিন্দা এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আনিচুর রহমানের ব্যাপারে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। ওই শটগানটি শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের ছিল। সেটি উদ্ধারে পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান ​ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ ছাড়াও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকা ঝালুপাড়া গ্রামের দুই বাসিন্দা বলেন, মোমিনুর রহমানের নিকট আত্মীয় আনিচুর। চাকরি যাওয়ার পর থেকে তিনি মোমিনুরের সঙ্গে চলাফেরা করেন।

গতকাল শনিবার জাতীয় শোক দিবসে জেলা আওয়ামী লীগের র‍্যালি শেষে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সঙ্গে মোমিনুর রহমানের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে সবুজ হোসেন (২৪) নামে আওয়ামী লীগের এক সমর্থক নিহত হন।

আজ সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানায় গিয়ে কথা হয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল খালেকের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত সবুজের বাবা মোবারক হোসেন থানায় এ ব্যাপারে হত্যা মামলা করবেন। ওসি আরও বলেন, রাতে অভিযান চালিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন সবুজের লাইসেন্স করা শটগান, শটগানের ৪৬টি গুলি, লাইসেন্স করা পিস্তলের ৬৪টি গুলি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তবে পিস্তল পাওয়া যায়নি। সবুজ এ সময় বাড়িতে ছিলেন না।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনা সম্পর্কে তিনি আশপাশের দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যিনি শটগানের গুলি ছুড়েছেন তাঁকে পুলিশ খুঁজছে। ঘটনার সময় পুলিশের গাফিলতি ছিল কি না খতিয়ে দেখা হবে।

আরও পড়ুন: