চট্টগ্রামে হামলায় আহত ২ জায়ের অবস্থা স্থিতিশীল

চট্টগ্রাম নগরের সরাইপাড়ার পশ্চিম ঝর্নাপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত দুই নারীর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এদিকে ওই হামলার ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
গত বুধবার পশ্চিম ঝর্নাপাড়া এলাকায় বাড়ি দখল নিয়ে বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ফয়েজুন্নেছা ও জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ওই দুই নারী আহত হন। তাঁরা পরস্পরের জা। তাঁরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম মো. জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা ফয়েজুন্নেছার অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর পেটের বাচ্চা স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। ছোট জা জান্নাতুল ফেরদৌসের অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে পরীক্ষায় তাঁর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ মেলেনি। এ জন্য আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে। যদিও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় আহত দুজনকে অন্তঃসত্ত্বা বলা হয়েছিল।’ বুধবার জান্নাতুলের স্বামী ফজলুল হক ওরফে সুমন বলেছিলেন, আহত দুই জা অন্তঃসত্ত্বা।
ফজলুল হক চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সহসভাপতি। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
এদিকে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত দুই নারীর বড় জা সেলিনা ইয়াসমিন গতকাল দুপুরে এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মাহবুব আলম, প্রতিবেশী ফাহিম উদ্দিনসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী সেলিনা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা বাড়ি দখলের চেষ্টা করেছিল। এদের মধ্যে মাহবুব আলম ভূমিদস্যু। তিনি আমাদের বাড়ির জায়গার ওপর রাস্তা করতে চাচ্ছেন। ফাহিম নামের আরেক ব্যক্তি এই হামলায় নেতৃত্ব দেন।’
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন জানান, মামলার আসামিদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার আসামি ও ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মাহবুব আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় তিনি অনেক দূরে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ফজলুল হক আমার দলের ছাত্রসংগঠনের নেতা। দল ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁর (ফজলুল) পরিবার ফাহিম উদ্দিনের সাড়ে পাঁচ গন্ডা (প্রতি গন্ডায় ৮৬৪ বর্গফুট) জায়গা জোর করে দখল করে নেয়।’
ফাহিম উদ্দিন বলেন, ‘বুধবার আমরা পৈতৃক জায়গায় সীমানাবেড়া দিতে গেলে ওরা হামলা চালায়। আমরা বাধা দিলে অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে। তবে হামলার সঙ্গে আমরা জড়িত নই।’
গতকাল দুপুরে পশ্চিম ঝর্নাপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে সাত গন্ডা জায়গার ওপর সেমিপাকা ও টিনশেডের কয়েকটি ঘর বানিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ভাড়া দিয়েছে ফজলুল হকদের পরিবার। সেখানে ১৪ পরিবার ভাড়া থাকে। বুধবারের ঘটনার সময় রান্নাঘরসহ কয়েকটি ঘর ভাঙচুর করা হয়। একটি সেমিপাকা ঘরে বসবাস করে ফজলুল হক ও তাঁর মেজ ভাই জহিরুল হকের পরিবার। ওই ঘরের জানালা ভাঙা দেখা যায়। ঘরের মেঝেতে দেখা যায় রক্তের দাগ। এ ছাড়া বসার ঘরে পড়ে ছিল চারটি বঁটি।
বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব আলম বলেন, পুলিশ চলে আসায় হামলাকারীরা বঁটিগুলো রেখে পালিয়ে যায়।
বাড়ির ভাড়াটে নজির হোসেন বলেন, বুধবারের হামলার কারণে আতঙ্কিত ১০টি ভাড়াটে পরিবার বাসা ছেড়ে চলে গেছে।