রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হলের এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এর প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের পক্ষে তাঁর হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ গতকালও অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন ও বিক্ষোভ করেছে।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, গত ২৩ নভেম্বর তিনি হলের কক্ষে সিটের জন্য হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে হলের ওই আবাসিক শিক্ষক ছিলেন। তাঁরা সিট দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি তাঁর সাংগঠনিক পরিচয় দেন। এ সময় ওই শিক্ষক তাঁকে এবং ছাত্রলীগ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় শোভাযাত্রা শেষে তাঁর হলে ফিরতে দেরি হয়। এ সময় হল গেটে ওই শিক্ষক তাঁকে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে দেখা করতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর ওই শিক্ষক তাঁর সঙ্গে আপত্তিকর ও অশোভনীয় কথা বলেন।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে রোববার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। একই দাবিতে সোমবার তারা ক্যাম্পাসে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করে। তবে রোববারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, যৌন হয়রানির ঘটনা সত্য নয়।
গতকাল ওই শিক্ষকের পক্ষে রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই ছাত্রীর শাস্তি দাবি করে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২৩ নভেম্বর ওই ছাত্রী সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে হলের সিট দাবি করেন। তবে ওই শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষ সিট দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেখানে ছাত্রলীগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ১৬ ডিসেম্বর হলের বিজয় শোভাযাত্রা শেষে খাবার বিতরণ করার সময় ওই ছাত্রীকে খাবার নিতে দেখা যায়নি। এমনকি ওই শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর দেখা বা কথা হয়েছে এমনটি হলের কারও নজরে পড়েনি।
হলের প্রাধ্যক্ষের প্যাডে করা এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেন আবাসিক শিক্ষক রনক জাহান, উপ-রেজিস্ট্রার প্রণব কুমার বিশ্বাস, সেকশন অফিসার আবুল কালাম আজাদ, হিসাব সহকারী পিয়ারুল ইসলাম, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ঝর্ণা রানী গুণ, সহকারী রেজিস্ট্রার মকবুল হোসেনসহ ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ছাড়া অভিযোগের সঙ্গে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সবার অভিযোগই খতিয়ে দেখছি। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’