দন্তচিকিৎসক বুলবুল হত্যাকাণ্ডে ছিলেন ৫ জন

দন্তচিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল
ছবি: সংগৃহীত

দন্তচিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দুই ছিনতাইকারী। এই দুজনসহ চারজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের একজনের কাছ থেকে বুলবুলের খোয়া যাওয়া মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটিও উদ্ধারের কথা তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আরিয়ান ওরফে হাফিজুল ওরফে হৃদয় (৩৯) ও সোলায়মান (২৩) গতকাল রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া তাঁদের সহযোগী রায়হান ওরফে আপন ওরফে সোহেল (২৭) ও রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫) এখনো পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, বুলবুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনই ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তাঁদের দলনেতা রিপন এখনো পলাতক। এই পাঁচজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রায়হানের কাছ থেকে ওই চিকিৎসকের মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। আর আরিয়ান ও সোলাইমানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে।

স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তাঁরা পাঁচজন ২৬ মার্চ দিবাগত রাত ২টা থেকে ছিনতাই করার উদ্দেশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। বুলবুল যখন রিকশায় করে পশ্চিম কাজীপাড়ার নাভানা ফার্নিচারের সামনে আসেন, তখন তাঁর গতি রোধ করেন। দলনেতা রিপনসহ অন্যরা বুলবুলের কাছে যা আছে দিতে বলেন। বুলবুল দিতে রাজি না হলে তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিলে রিপন বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় এক পাশ দিয়ে দুটো সিএনজি অটোরিকশা আসতে দেখে তাঁরা পালিয়ে যান।

ডিবি পুলিশের একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ছিনতাইকারীরা বুলবুলের ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে ঊরুতে আঘাত করেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজনসহ বিহঙ্গ পরিবহনের বাসচালক আশিফ ও চালকের সহকারী সাগর বুলবুলকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাম্মী আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গত ৩০ মার্চ ওই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন আদালত তাঁদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশের তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার রাসেলের বিরুদ্ধে মাদক, অপহরণ, হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর রায়হানের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির একটি মামলা রয়েছে।

ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন শাম্মী আক্তার। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারাই আমার স্বামীকে খুন করুক তাদের যেন দ্রুত বিচার করে শাস্তি কার্যকর করা হয়।’