নওগাঁয় যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ
![](https://images.prothomalo.com/prothomalo%2Fimport%2Fmedia%2F2017%2F12%2F31%2F44a1f5474295746b8a999088dee02990-5a485f059f76c.jpg?auto=format%2Ccompress)
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য তাঁর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ বলছে, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরিবার বলছে, তাঁরা দুজন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন।
নিহতের নাম ববিতা আখতার (২৫)। অভিযুক্তের নাম মামুনুর রশিদ (৩২)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চক গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ও অভিযুক্ত দুজনের বাড়ি একই গ্রামে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার নিহতের বাবা আনিকুল ইসলাম মামুনুরের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন মামুনুর ও ববিতা। দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মামুন যৌতুকের দাবিতে তাঁর স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত মার্চ মাসে ববিতা মামুনুরের বিরুদ্ধে থানায় নির্যাতনের অভিযোগ করেন। তখন থানা-পুলিশের উপস্থিতিতে সালিস বৈঠকে মামুন আর কোনো দিন তাঁর স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাবেন না বলে অঙ্গীকারনামা দেন। কিন্তু কিছুদিন পর মামুন ববিতাকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা এনে দিতে বলেন। এ নিয়ে প্রায়ই ববিতাকে মারধর করা হতো। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ববিতাকে মারধর করে বাড়ির কক্ষে আটকে রাখা হয়। রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ফিরে মামুন আবারও তাঁর ওপর নির্যাতন শুরু করেন। এতে একপর্যায়ে ববিতার মৃত্যু হয়। এ সময় মামুন ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। সকালে প্রতিবেশীরা ওই গৃহবধূকে ডাকতে গিয়ে তালা দেখে স্বজনদের খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে।
গৃহবধূর বাবা আনিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন বছর আগে উপজেলার রামনগর গ্রামের এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় ববিতার। কিন্তু গত এক বছর সে তাঁর প্রথম স্বামীর সংসার ছেড়ে মামুনকে বিয়ে করে। তাঁরা দুজন সম্পর্ক করে (ভালোবেসে) এই বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে মামুন। আমার টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় প্রায়ই মেয়েকে মারধর করত মামুন। সর্বশেষ ২ লাখ টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে মেরেই ফেলল।’
নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক সুরতহালে মাথা ও মুখমণ্ডলসহ লাশের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে এটি হত্যাকাণ্ড কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’