বাবার ভয়ে শিক্ষকের বাসায় আশ্রয়

মানুষের পায়ের শব্দ পেলেই আঁতকে উঠছে মেয়েটি। মাঝে মাঝে চিৎকার করে উঠছে। সে মনে করছে, স্বামীর ঘরে তুলে দিতে বাবা তাকে ধরতে আসছেন। এ অবস্থা নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাল্যবিবাহের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নূরুন্নাহারের। সে এখন তারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আফজাল বিন নাজিরের বাড়িতে অবস্থান করছে।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের খিয়ারপাড়া গ্রামে অধ্যক্ষের বাড়িতে গিয়ে গতকাল রোববার কথা হয় নূরুন্নাহারের সঙ্গে। সে বলে, তার বাড়ি কামারপুকুর ইউনিয়নের আলোকদিপাড়া গ্রামে। বাবার নাম নবিউল ইসলাম ওরফে কালা। বাবা মুরগি ব্যবসায়ী। সে পাশের খিয়ারপাড়া আলিম অ্যান্ড ভকেশনাল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে ২৪ নভেম্বর জোর করে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রাজমিস্ত্রী লুৎফরের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। সে ওই রাতেই শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে এসে পরদিন সহপাঠীদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে। সে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে।
নূরুন্নাহার আরও বলে, তার বাবা কঠিন হৃদয়ের মানুষ। তিনি তাকে তুলে নিয়ে যেতে পারেন। যদি নিয়ে যান তাহলে বাবা তাকে হত্যা করতে পারেন। এ নিয়ে সে আতঙ্কে আছে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আফজাল বিন নাজির বলেন, ‘মেয়েটি আতঙ্কে আছে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আমার বাসায় আপাতত রাখতে বলা হয়েছে। আমিও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেননা মেয়েটির বাবা ধুরন্ধর প্রকৃতির।’
খোঁজ নিয়ে নূরুন্নাহারের বাবা নবিউলকে কোথাও পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ। বাড়িতেও তালা ঝুলতে দেখা যায়। নূরুন্নাহারের স্বামী লুৎফরকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, যেকোনো সময় নবিউল গ্রেপ্তার হতে পারেন।