বাসচাপায় নিহত শাহরিয়ারের মৃত্যুর ঘটনায় বাসচালক গ্রেপ্তার হয়নি

শাহরিয়ার সৌরভ সেজানকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
শাহরিয়ার সৌরভ সেজানকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

তিন দিন আগে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বাসের চাপায় নিহত হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র শাহরিয়ার সৌরভ ওরফে সেজান (২৮)। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত বাসচালককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ বলছে, ঘাতক বাসচালকের নাম তাঁরা জানতে পেরেছেন। শিগগিরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক বুধবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, যে বাসের চাপায় শাহরিয়ার নিহত হয়েছেন, সেই বাস জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু বাসচালককে এখনো ধরতে পারেননি।

বাসচালকের পাশাপাশি বাসমালিককে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি কাজী সাহান হক। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। যেকোনো সময় বাসচালক গ্রেপ্তার হবেন। বাসচাপায় শাহরিয়ার নিহত হওয়ার পর সেদিনই তাঁর স্ত্রী মুনিয়া ইসলাম মজুমদার বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় অজ্ঞাত বাসচালককে আসামি করে মামলা করেন

নিহত শাহরিয়ার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাড়ি তাঁর ঠাকুরগাঁও শহরের হলপাড়ায়। বছর খানেক আগে তিনি বিয়ে করেন। তাঁর বাবা আবদুস সউদ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আবদুর রশিদ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক। মা সেলিনা আখতার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক। এক ভাই ও বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।

টিচ ফর বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ফেলোশিপ করছিলেন শাহরিয়ার। ১ জুলাই সকালে পল্লবীর বাসা থেকে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন দক্ষিণখান এলাকায়। তিনি সকাল সাড়ে নয়টার দিকে যখন কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে আসেন, তখন বসুমতী নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেয়।

মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি পড়ে গেলে বাসটি তাঁকে চাপা দেয়। পুলিশের সহায়তায় প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা গুরুতর আহত অবস্থায় শাহরিয়ারকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহরিয়ারের বাবা আবদুস সউদ বলেন, গত ঈদ তাঁরা (তিনি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে) করেছেন ছেলের সঙ্গেই ঢাকায়। সে সময় সেজান নতুন একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার ভাবনার কথা তাঁকে জানান। গত ২৯ জুন একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে পরের দিন সেখানে ওঠেন। এরপর পর সেজান সেখানে তাঁকে (সউদ) নিয়ে যেতে আবদার করতে শুরু করেন। বাবাকে আকৃষ্ট করতে সেজান একসময় সেই ফ্ল্যাটের ছবি তুলে ফেসবুকে দেন।

আবদুস সউদ বলেন, ‘ছবিগুলো দেখে ছেলের ফ্ল্যাটে একবার দেখে আসব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে ছেলে বিদায় নিল।’