ভাই, ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি

নিহত তিনজন হলেন আসাদ মিয়া, তাঁর স্ত্রী পারভিন আক্তার ও তাঁদের ছেলে মো. লিয়ন
ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে বড় ভাই, ভাবি ও এক ভাতিজাকে খুন করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দ্বীন ইসলাম (৪০)। আজ রোববার সকালে এই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। কিশোরগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আ. নূর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

নিহত তিনজন হলেন আসাদ মিয়া (৫৫), তাঁর স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪৫) ও তাঁদের ছেলে মো. লিয়ন (১২)। দ্বীন ইসলাম নিহত আসাদের ছোট ভাই।

আসাদের বাড়ি উপজেলার জামষাইট কান্দাপাড়া গ্রামে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পেছনে বাঁশঝাড়ের কাছে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তাঁদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় উপজেলার মুমূরদিয়া বাজার থেকে দ্বীন ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে আসাদের মা কেওয়া খাতুন, বোন নাজমা বেগম ও তাসলিমা বেগম, ভগ্নিপতি ফজলু মিয়া, ভাগনে আল আমিন, আজিজুল ইসলাম, মিজান মিয়া ও রায়হান মিয়াকে আটক করা হয়। পরবর্তী সময়ে আসাদের বড় ছেলে তোফাজ্জল মিয়ার দায়ের করা হত্যা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পাঁচজনের মধ্যে দ্বীন ইসলাম জবানবন্দি দেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, জবানবন্দিতে দ্বীন ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাবল হাতে ঘরে ঢুকে প্রথমে ভাবিকে, এরপর ভাতিজা লিয়নকে এবং শেষে বড় ভাই আসাদকে হত্যার কথা বলেছেন। পরে তাঁদের মাটিচাপা দেন। পরনের জামাকাপড় পরিবর্তন করে একটি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান। এ ঘটনার আরও কেউ জড়িত ছিলেন কি না জানতে আসাদের মা, বোন, বোনজামাই ও ভাগনেদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। আজ রোববার এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হবে।

গতকাল সকালে আসাদ মিয়ার বড় ছেলে তোফাজ্জল মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় কাউকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়নি। তবে মামলার বর্ণনায় সন্দেহের তালিকায় পরিবারের নয় সদস্যের কথা উল্লেখ করা আছে। তাঁরা হলেন বাদীর চাচা দ্বীন ইসলাম (৪২), দাদি কেওয়া খাতুন, ফুফু নাজমা বেগম, তাসলিমা বেগম, ফুফা ফজলু মিয়া, ফুফাতো ভাই আল আমিন, আজিজুল ইসলাম, মিজান মিয়া ও রায়হান মিয়া।

পেশাগত কারণে আসাদ দীর্ঘদিন ঢাকায় থেকেছেন। কয়েক বছর আগে গ্রামে ফিরে আসেন এবং নিজ এলাকায় একটি প্লাস্টিক পণ্যের দোকান দেন। তাঁর তিন ছেলে। বড় ছেলে তোফাজ্জল মিয়া (১৮) ও মেজ ছেলে মোফাজ্জল মিয়া (১৬)।