যুবলীগ নেতাসহ ৬৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

আদালত
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তরে (সিআরবি) কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় শিশুসহ দুজন নিহত হওয়ার ঘটনার মামলায় যুবলীগ নেতাসহ ৬৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

আজ সোমবার বিকেলে তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসীম উদ্দিন এই আদেশ দেন। আদালতের এই আদেশের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার শুরু হলো।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহমেদ এই তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে বলেন, আগামী ২৫ মে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

রেলওয়ের কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক অর্থবিষয়ক সহসম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর এবং ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমানে নগর যুবলীগের সদস্য সাইফুল আলম ওরফে লিমনের অনুসারী নেতা-কর্মীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় গুলিতে প্রাণ হারান যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু মো. আরমান (৮)।

এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৮৭ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করে। পরে নিহত সাজু পালিতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে আরেকটি মামলা করা হয়। আদালত থানায় হওয়া মামলার সঙ্গে মামলাটি যুক্ত করার আদেশ দেন।

বাবর চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে লিমন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে যুবলীগের কর্মী অজিত বিশ্বাস ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু রয়েছেন। অন্য আসামিরা বাবর ও লিমনের অনুসারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

তদন্ত শেষে নগর গোয়েন্দা পুলিশ এই মামলায় ২০১৫ সালে বাবরসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা গ্রহণ না করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিবিআই বাবর, লিমন, অজিতসহ ৬৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। কিন্তু ঘটনায় ব্যবহৃত কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার দিন দুই পক্ষ (বাবর ও লিমন) মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে অজিত বিশ্বাস পূর্বশত্রুতার কারণে সাজু পালিতকে গুলি করেন। এ সময় লিমনের অনুসারীরা বাবরের অনুসারীদের দিকে এগিয়ে গেলে অজিত আবার গুলি ছোড়েন। সেই গুলিতে শিশু আরমান নিহত হয়। বাবর, লিমন, অজিতসহ ৬৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সাজু পালিতের বড় ভাই উৎপল পালিত বলেন, সেদিন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সময় অজিত বিশ্বাসই তাঁর ভাইকে গুলি করেছেন। প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। পরোয়ানা থাকলেও অজিত প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছেন। অথচ পুলিশ তাঁকে ধরছে না।
নিহত শিশু আরমানের মা আছিয়া বেগম বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিনি পরিবার নিয়ে সিআরবি এলাকার একটি কলোনিতে থাকেন। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান তিনি।