রাজবাড়ীতে ইউপির জমিতে আ.লীগ নেতার ভবন

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় একজন আওয়ামী লীগ নেতা সরকারি জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভবন নির্মাণের স্বার্থে কেটে ফেলা হয়েছে ৩৩টি মেহগনিগাছ। বিষয়টি জানতে পেরে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম গোলাম মোস্তফা মণ্ডল। তিনি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের সেকেন মণ্ডলের ছেলে এবং নারুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা নারুয়া ইউনিয়নের খালিয়া মধুপুর মৌজায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মালিকানাধীন একটি জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন। সেখানে তিনি সম্প্রতি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করেন। উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে গত সোমবার লোকজন গিয়ে জমিটি মাপজোখ করেন। এতে দেখা যায়, গোলাম মোস্তফা ৩২ ফুট সরকারি জায়গা দখল করেছেন। পরিমাণে তা ৫ শতাংশ।
এ ঘটনার পর বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম রকিব হায়দার আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফাকে ওই দিনই নিজের কার্যালয়ে ডাকেন। এ সময় তিনি ওই নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কেটে ফেলা মেহগনিগাছগুলো জব্দ করা হয়।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সহকারী গোলাম পাঞ্জাতন বলেন, কেটে ফেলা গাছগুলো জব্দ করে তাঁরা নিজেদের জিম্মায় রেখেছেন। আর মাপজোখ করে ভবনটি ৩২ ফুট সরকারি জমির মধ্যে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবেন তাঁরা।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে খালিয়া মধুপুর প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কেটে রাখা মেহগনিগাছগুলো ঘটনাস্থলে পড়ে আছে। ফাঁকে ফাঁকে আরও কিছু মেহগনিগাছ দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভবনের বাইরে এখনো রঙের কাজ করা হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমার জমিতেই ঘর তুলেছি। এক প্রতিবেশীর সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ কারণে ওই ব্যক্তি উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন। জমি মেপে দেখা গেছে, আমার ভবনটির মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য জমি পড়েছে।’ গাছগুলো তিনি নিজে লাগিয়েছিলেন দাবি করে আরও বলেন, ইউএনওর কার্যালয় থেকে নির্দেশ আসার পর তিনি আর কোনো মেহগনিগাছ কাটেননি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁরা জমিটি মাপজোখের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এখন তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন হাতে পেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।