রাসমেলায় বোমা হামলা, রক্তাক্ত ৬
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ঐতিহাসিক কান্তজির মন্দির প্রাঙ্গণে রাসমেলার যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা হামলা হয়েছে। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন ছয়জন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর রাসমেলায় যাত্রাপালা, সার্কাসসহ সব ধরনের বিনোদনের আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আহতেরা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা হলেন, উমাকান্ত দাস (২২), আব্দুল জব্বার (২৫), মোকাদ্দের হোসেন (২৪), মো. সাইদুল ইসলাম (৩২), সাধন রায় (৩০) ও আবু সাইদ (৩২)। হাসপাতালের ইউনিট-৩ এর দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সোহেল উল্লাহর ভাষ্য, তাঁদের সবাই স্প্লিন্টারে আহত হয়েছেন। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল জব্বার বাদে বাকি চারজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁরা বলেন, যাত্রাপালার প্যান্ডেলের খুঁটির কাছে তাঁরা ছিলেন। হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। বিকট শব্দ হয়। জীবন বাঁচাতে প্যান্ডেল থেকে সবাই বের হয়ে যান। বাইরে গিয়ে দেখেন পা দিয়ে রক্ত ঝরছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনের ব্যাটারির মতো দেখতে একটি সার্কিট ও তার আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যাত্রাপালার প্যান্ডেলের খুঁটির কাছে বোমাটি রাখা ছিল। দর্শনার্থীদের কারও চাপ পড়ে বা বাইরে থেকে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তিনি বলেন, ১৮ নভেম্বর ইতালীয় চিকিৎসক ও ধর্মযাজক পিয়েরো পিচমকে (৫২) হত্যার চেষ্টা, ৩০ নভেম্বর চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে বীরেন্দ্র নাথ রায় (৬৪) নামের এক হোমিও চিকিৎসককে গুলি ও রাসমেলায় হামলার ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা।
মন্দিরের সেবার কাজে নিয়োজিত প্রেমনাথ রায় (৬০) প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত একটার দিকে মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে উত্তরদিকে কৃষিজমিতে ‘ভোলানাথ অপেরা’ নামের একটি যাত্রা চলছিল। এ সময় প্যান্ডেলে বিস্ফোরণ ঘটে।
মেলার ইজারাদার মো. হারেছ আলী শাহ বলেন, বিস্ফোরণের পর তাঁরা কাউকে পালিয়ে যেতে দেখেননি। আহতরা প্রায় সবাই শরীরের নিচের অংশে বিশেষ করে পায়ে আঘাত পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরকটি মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল।
কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন...