লাশের সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করতেন তিনি

মো. সেলিম

চট্টগ্রামে ৩২ বছর বয়সী এক নারী ও ১২ বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুর অপমৃত্যু হয় এক বছর আগে। ময়নাতদন্তের আগে লাশগুলো ছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের লাশঘরে। তাঁরা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না, তা পরীক্ষা করতে প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস)’ সংগ্রহ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)এর ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। কিন্তু পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি।

সিআইডি বলছে, মরদেহগুলো লাশকাটা ঘরে আসার পর সেগুলোর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করেছিলেন মো. সেলিম। আজ সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় সিআইডির পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে।

সেলিম মূলত লাশকাটা ঘরের পাহারা দিতেন। তিনি গাড়ি থেকে লাশ ওঠানো-নামানোর কাজ করতেন। হাসপাতাল থেকে কোনো বেতন না পেলেও, মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নিতেন।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার সেলিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এক নারী ও শিশু লাশের সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। সেলিমের বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় একটি ধর্ষণের মামলাও রয়েছে।

আরও পড়ুন

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, পরীক্ষায় এই এইচভিএসগুলোতে পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। শুক্রাণুর ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিং করে সেটি একই ব্যক্তির বলে নিশ্চিত হন পরীক্ষকেরা। অথচ এই মরদেহগুলোর সুরতহালে বলপ্রয়োগজনিত কোনো আঘাতের চিহ্ন বা ধর্ষণের চিহ্নের কথা উল্লেখ ছিল না।

বিষয়টি চট্টগ্রাম সিআইডিকে জানানোর পর অনুসন্ধান করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, লাশঘরের সেলিমই জড়িত। পরে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তিনি নিজেই স্বীকার করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান প্রথম আলোকে বলেন, সেলিম হাসপাতালের কর্মচারী নন। কীভাবে লাশঘরে ঢুকে থাকেন, পুলিশি তদন্তে বের হবে। এই ঘটনা গত বছরের।

২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ডোমের সহযোগী মুন্না ভক্তকে (২০) গ্রেপ্তার করেছিল সিআইডি। পাঁচটি আত্মহত্যার ঘটনায় লাশ এসেছিল রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, ছিল না ধর্ষণের আলামতও। অথচ সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডাক্তারের পাঠানো প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াবে (এইচভিএস) ’ পাওয়া যায় একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি। সিআইডির ডিএনএ ল্যাবরেটরিতেও পাঠানো প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াবে (এইচভিএস) ’ পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মরদেহগুলো মর্গে আসার পর সেগুলোর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করেছিলেন ডোমের সহযোগী মুন্না ভক্ত (২০)।