লিবিয়ায় অপহরণ, দেশে মুক্তিপণ আদায়

লিবিয়ায় অপহরণের পর বাংলাদেশে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে অপহরণকারী একটি চক্রের বাংলাদেশে অবস্থানরত পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

লিবিয়ায় কর্মরত শ্রমিক চাঁদপুরের ফয়েজ উল্লাসহ তিনজনকে তিন মাস আগে অপহরণ করে বাংলাদেশেরই একদল লোক। তাঁদের আটকে রেখে নির্যাতনও করা হয়। একপর্যায়ে অপহরণকারীদের দাবির মুখে ফয়েজ উল্লার ভাই আচান উল্লা দেশে বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। এরপর সেপ্টেম্বরে ফয়েজের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন।

ফয়েজসহ এ রকম চারজনের পৃথক অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণকারী চক্রটির বাংলাদেশে অবস্থানরত পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক গোলাম সারোয়ার বলেন, লিবিয়ায় অপহরণের শিকার চারজনের পৃথক অভিযোগের ভিত্তিতে র‍্যাব-৩ ও র‍্যাব-১ এর দুটি পৃথক দল ঢাকা, গাজীপুর ও ফরিদপুরে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আবদুল কুদ্দুস মোল্লা, হান্টু মোল্লা, বেলাল, লিটন খান ও নূর মোহাম্মদ ওরফে দুলাল।

র‍্যাব জানিয়েছে, একইভাবে চাঁদপুরের আচানউল্লাহ এবং নাটোরের মিন্টু আলী খানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি। এ রকম পরিস্থিতিতে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে, বাংলাদেশে অবস্থানরত অপহৃতদের স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে র‍্যাব তদন্ত শুরু করে।

র‍্যাব জানায়, তদন্তে অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার বেলাল মাতুব্বর, সদরপুরের জাকির মোল্লা ও তার বাবা হান্টু মোল্লার যুক্ততা পাওয়া যায়। এ ছাড়া মুক্তিপণের টাকা গ্রহণকারী বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরেও চলে তদন্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে চক্রের সদস্য কুদ্দুস মোল্লা ও হান্টু মোল্লাকে গতকাল শনিবার রাতে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বেলালকে। মুক্তিপণের টাকা বুঝে নিয়ে আবারও লিবিয়া যাওয়ার প্রস্তুতির সময় ধরা পড়েন বেলাল। আর কুদ্দুস মোল্লার বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা নেওয়া হয়। আরেক লিবিয়া প্রবাসী হান্টু সরাসরি অপহরণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে এসে ধরা পড়েন তিনি। এ ছাড়া নাটোরের মিন্টু খানের ছোট ভাই রিন্টু খানের অভিযোগের ভিত্তিতে র‍্যাব-১ এর একটি দল গাজীপুর থেকে লিটন খান ও নূর মোহাম্মদ দুলালকে গ্রেপ্তার করে।