শহীদুন্নবীকে হত্যার প্রতিবাদে বন্ধ ছিল রংপুরের শালবনের দোকানপাট

লালমনিরহাটের বুড়িমারী এলাকায় আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহীদুন্নবী ওরফে জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে রংপুর নগরের শালবন এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার দুই ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ ছিল। সেই সঙ্গে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ চার দফা দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন এবং পুলিশের ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

আজ বৃহস্পতিবার শালবন এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। রংপুর নগরের যে এলাকায় নিহত শহীদুন্নবীর বাড়ি, ওই এলাকার বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারের মাধ্যমে এলাকাবাসীর কর্মসূচির বিষয়টির প্রচারণা চালানো হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা ওই শালবন এলাকার সব দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। এ সময় এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাচারিবাজার এলাকায় যায়। পরে রংপুর পুলিশ রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। এ দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে সব হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা, হত্যার বিচারকাজ স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে সম্পন্ন করা, সরকারের পক্ষ থেকে আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহীদুন্নবীকে ধর্ম অবমাননার অপবাদ থেকে আনুষ্ঠানিক দায়মুক্ত ঘোষণা করা এবং নিহত ব্যক্তির পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকারের বহন করা।

নিহত শহীদুন্নবী রংপুর শহরের শালবনের রোকেয়া সরণি এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তিনি রংপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁর দুই ছেলেমেয়ে। মেয়ে এবার এইচএসসি পাস করেছে এবং ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

গত ২৯ অক্টোবর বিকেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।