শাহজাহানপুরে জোড়া খুনের অস্ত্র মোল্লা শামীমের কাছে

মোল্লা শামীম নামের এই যুবক ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা, তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার শাহজাহানপুরে ব্যস্ত সড়কে গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যা করা হয়েছিল যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে, সেটি মোল্লা শামীম নামের ওই এলাকার এক যুবকের কাছে রয়েছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সুমন শিকদার ওরফে মুসাকে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার সম্পর্কে তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

সুমন শিকদারের তথ্যের ভিত্তিতে ওই অস্ত্র ও গুলি সরবরাহে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন পুরানা পল্টনের একটি অস্ত্রের দোকানের মালিক ইমরান হোসেন (৩২), পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদের সহযোগী ইশতিয়াক আহমেদ (জিতু) এবং মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতা রাকিবুর রহমান (রাকিব)। আদালতের অনুমতিতে বর্তমানে তাঁরা তিনজনই পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। এ ছাড়া সুমন শিকদারও দ্বিতীয় দফায় শুক্রবার থেকে চার দিনের রিমান্ড রয়েছেন।

দলীয় ও অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ২৪ মার্চ রাতে শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (টিপু) নিহত হন। সে সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হত্যাকাণ্ডের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সুমন শিকদারকে ৯ জুন ওমান থেকে ফিরিয়ে আনে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি সরবরাহ করেছিলেন ঢাকার অপরাধজগতের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ। হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্তের পর তাঁর নির্দেশে সুমন শিকদারের কাছে অস্ত্রটি পৌঁছে দেন ইশতিয়াক আহম্মেদ। পরে ইমরান হোসেনের দোকান থেকে গুলি নিয়ে সুমন শিকদারের কাছে পৌঁছে দেন ছাত্রলীগ নেতা রাকিব।

সুমন শিকদার এই অস্ত্র ও গুলি শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা মোল্লা শামীমের কাছে দেন। ঘটনার দিন মোল্লা শামীমের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গুলি চালিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ। হত্যাকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় মাসুমকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
ডিবির একটি সূত্র বলছে, মাসুম গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারতে চলে যান মোল্লা শামীম।

পরে ভারত থেকে তিনি বিভিন্ন সময় নেপাল ও ভুটানে ভ্রমণ করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে বর্তমানে শামীম ভারতে আছেন। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি শামীমই কোথাও রেখে গেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার ইশতিয়াক আহম্মেদ ২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি। তাঁকে নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।