সিংড়ায় ইউপি সদস্যের স্ত্রী ও মেয়েকে কুপিয়ে জখম

নাটোরের সিংড়ার তারাই গ্রামে দুর্বৃত্তরা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। হামলার শিকার মা ও মেয়ে ইউপি সদস্য ইউনুছ আলীর স্ত্রী ও মেয়ে। গ্রামের সাবেক এক ইউপি সদস্য ও তাঁর ভাইকে খুনের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদিকে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরে ইউপি সদস্য বাবলু প্রামাণিককে (৪৫) কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ।

সিংড়া থানা ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শনিবার মধ্যরাতে সাতজন দুর্বৃত্ত তারাই গ্রামের বাসিন্দা ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউনুছ আলীর শোবার ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে। ঘরে ঢুকেই তারা ইউনুছ আলীর স্ত্রী কাজলরেখা বেগম (৪০) ও মেয়ে আয়েশা খাতুনকে (১৭) এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। মা-মেয়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নেন। সেখানে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ জানান, মা-মেয়ে দুজনের অবস্থাই গুরুতর। তবে মেয়ে আয়েশার আঘাত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তাকে রাজশাহী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহত কাজলরেখা বলেন, গ্রামে কিছুদিন আগে সাবেক এক ইউপি সদস্য ও তাঁর ভাই খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী ও আত্মীয়স্বজনকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে কারাগারে। এই সুযোগে নিহত ব্যক্তিদের লোকজন আক্রোশবশত এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মণ্ডল বলেন, সম্প্রতি পাশের গ্রাম বড়গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন ও তাঁর ভাই হাসেন আলী খুন হন। এ-সংক্রান্ত মামলায় কয়েক দিন আগে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মামলার প্রধান আসামি ইউপি সদস্য ইউনুছ ও তাঁর ভাই। নির্বাচন নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই ঘটনার জের ধরেই ইউনুছ আলীর বাড়িতে হামলা হয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবলু প্রামাণিককে (৪৫) কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত শনিবার রাতে সাড়ে আটটার দিকে পুরুলিয়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য বাবলু প্রায় এক বছর আগে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি প্রতিবেশী আনোয়ারুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। বকেয়া ২৫ হাজার টাকা দেই-দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপণ করছিলেন আনোয়ারুল। গত শনিবার সন্ধ্যার পর ইউপি সদস্য লোকজন নিয়ে আনোয়ারুলের বাড়িতে গিয়ে বিক্রি করা মোটরসাইকেলটি কেড়ে নেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হলে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের কোপে ইউপি সদস্য আহত হন। পরে আহত ইউপি সদস্য বাবলু ও আনোয়ার দুজনকেই গুরুদাসপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল রোববার অবশ্য তাঁরা দুজনই হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমিন সুলতানা জানান।

ওই ঘটনায় ইউপি সদস্য বাবলু বাদী হয়ে আনোয়ারুলসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করেছেন। ওসি দিলীপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।