হাতিয়ায় গুলিতে আহত কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার মৃত্যু, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নোয়াখালীর হাতিয়া আফাজিয়া বাজারে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আশরাফ উদ্দিন (৪৫) মারা গেছেন। আজ রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আজ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দুটি ঘর।

নিহত আশরাফ উদ্দিন হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শরীরচর্চা শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। আজ সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে মুঠোফোনে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশরাফের ভাতিজা সালেউদ্দিন রনি। তিনি জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ৩০ মার্চ হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারে সন্ত্রাসী রবীন্দ্র বাহিনীর হামলার শিকার হন যুবলীগ নেতা আশরাফসহ কয়েকজন। গুরুতর আহত আশরাফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তাঁর মৃত্যু হলো।
এদিকে যুবলীগ নেতা নিহত হওয়ার খবর হাতিয়ায় পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে থমথমে হয়ে ওঠে উপজেলা সদর ওছখালীর পরিবেশ। ওছখালী বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে বাজার ছেড়ে চলে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে থানা-পুলিশ উপজেলা সদরে টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, যুবলীগ নেতা আশরাফ নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিনের অনুসারী দলীয় নেতা-কর্মীরা তাৎক্ষণিক ওছখালীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল। তবে এ সময় অপর অংশের নেতৃত্বে থাকা সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলীর অনুসারীদের দেখা যায়নি।
পরিস্থিতি জানার জন্য হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবজ্যোতি খীসা প্রথম আলোকে বলেন, আশরাফ নিহত হওয়ার খবরে হাতিয়ার পরিস্থিতি থমথমে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি হাতিয়ার বিভিন্ন চরাঞ্চলের তদন্ত কেন্দ্র ও ক্যাম্প থেকে বেশ কিছু পুলিশ সদস্যকে উপজেলা সদরে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি কাল সকালে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে সেখানে যাবেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাতিয়া ডিগ্রি কলেজ এলাকার দুটি ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা আগুন দিয়েছে, তা কেউ বলতে পারেননি। তবে ঘর দুটির একটি যুবলীগ নেতা আশরাফের ওপর হামলার মামলার আসামি ছানু ফকিরের, আর অপরটি মহব্বত মেম্বারের বলে জানা গেছে।
অপর দিকে রাত পৌনে আটটায় হাতিয়া থানায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাতিয়া থানার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তাঁরা সবাই সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। বাইরে কী হচ্ছে তা তিনি বলতে পারছেন না।