৫-৭ লাখ টাকায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের জাল সনদ বিক্রি করছিল চক্রটি

ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে বিদেশি জাহাজে চাকরি দেওয়া একটি প্রতারক চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি
ছবি: প্রথম আলো

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের জাল সনদ তৈরি ও অধিদপ্তরের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে বিদেশি জাহাজে চাকরি দেওয়া একটি প্রতারক চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল রোববার রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডি বলছে, চাকরি দেওয়া এজেন্সি খুলে এ প্রতারণা করে আসছিলেন এ চক্রের সদস্যরা।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ওরিয়েন্টাল গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনালে মেরিটাইম একাডেমির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজুল আজাদ (৩৫), মঞ্জুরুল আজাদ (৩২), তারিকুল আজাদ (৩০), আইটি অফিসার মো. রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও মোহাম্মদ সোহেল রানা (২৯)।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানী মালিবাগের সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে কামরুল আহসান এসব কথা বলেন।

সিআইডির মালিবাগের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন
ছবি: প্রথম আলো

কামরুল আহসান বলেন, ‘বিদেশি জাহাজে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বেতন বাড়ানো ও ক্যারিয়ারে পরের ধাপে যেতে কম্পিটেন্সি ও প্রফিসিয়েন্সি সনদের প্রয়োজন হয়। আর গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পাঁচ-সাত লাখ টাকায় ভুয়া সনদগুলো দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে বাইরের দেশগুলোতে আমাদের সুনামের ক্ষতি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মকর্তা ও নাবিকদের যোগ্যতা সনদ পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনাসহ তা ইস্যু করার একমাত্র প্রতিষ্ঠান নৌপরিবহন অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি যেসব সনদ দিয়ে থাকে, তা হচ্ছে সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি) ও সার্টিফিকেট অব কম্পিটেন্স (সিএসি)। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক জাহাজে কর্মরত নাবিক ও কর্মকর্তাদের বিভিন্ন যোগ্যতা সনদ ইস্যু করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান, যা তাদের নিজস্ব সরকারি ওয়েবসাইটে www.dos.gov.bd সব সময় আপলোড থাকে।

তবে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে এমন অভিযোগ পায়, এক প্রতারক চক্র তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে যোগ্যতা সনদ যাচাইয়ের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার সোহেল রানা একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার ও এই চক্রের হোতা এবং ওয়েবসাইটটির ডিজাইনার। এর আগেও তিনি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণা করেছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি ল্যাপটপ, চারটি হার্ডডিস্ক, একটি পেনড্রাইভ ও ছয়টি মুঠোফোনসহ বেশ কিছু ডিজিটাল আলামত জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানিয়েছেন, একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুকরণে ‘www.dos-gov-bd.online’ নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নকল সনদ ভেরিফায়েড দেখিয়ে তাঁরা এ পর্যন্ত শতাধিক নাবিককে চাকরি দিয়েছেন।