গাড়ি নয়, কাগজপত্র চুরি করে চাঁদা তুলতেন তাঁরা

গাড়ির কাগজপত্র (ব্লু বুক) চুরি করে প্রতারণার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসে যাত্রী সেজে ওঠেন তাঁরা। চালকের পাশে বসে কৌশলে গাড়ির কাগজপত্র (ব্লু বুক) চুরি করে সুবিধাজনক জায়গায় নেমে পড়েন চক্রের সদস্যরা। পরে ওই কাগজপত্রের সঙ্গে থাকা গাড়ির মালিক কিংবা চালকের মুঠোফোনে কল করে কাগজ ফিরিয়ে দিতে চাঁদা দাবি করেন তাঁরা। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, গত তিন বছরে এভাবে চক্রের সদস্যরা প্রায় এক হাজার গাড়ির কাগজপত্র চুরি করে মালিকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছেন। গাড়ির কাগজপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করতেন তাঁরা।

গতকাল শনিবার রাজধানীর বছিলা থেকে এই চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—চক্রের প্রধান রাকিব মিয়া (২৭), মো. শুকুর আলী (২৮) ও মো. হৃদয় হোসেন (২১)।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানাতে আজ রোববার সিআইডির সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ইমাম হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকায় চলাচলকারী মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা, প্রজাপতি ও রবরব পরিবহন থেকে এসব ব্যক্তি কাগজপত্র চুরি করেন। পরে মালিকের কাছে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চালককে প্রাণনাশের হুমকি দেন তাঁরা। কাগজ ফিরে পেতে অনেক গাড়ির মালিক চক্রের সদস্যদের টাকা দেন।

ইমাম হোসেন বলেন, ‘টাকা পাওয়ার পর চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন গাড়ির সিট কেটে সেখানে কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতেন। এই চাঁদার টাকা লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের মাধ্যমে। তিনি বলেন, এক মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করি।’

সংবাদ সম্মেলনের পর ফরহাদ হোসেন নামের ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার গাড়ির কাগজপত্র চুরি করে টাকা দাবি করে এ চক্রের সদস্য রাকিব। টাকা দেওয়ার পরও তিনি পুরো কাগজপত্র আমাকে ফেরত দেননি। কিছু কাগজপত্র আটকে রেখে বারবার টাকা দাবি করে আসছিলেন তিনি।’

এক প্রশ্নের জবাব ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা লেনদেনে কয়েকটি বিকাশ একাউন্ট ব্যবহৃত হয়েছে। এসব চক্রের সঙ্গে একাউন্টধারী ব্যক্তিরা জড়িত কি না, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’