অপহরণ মামলায় ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের বিরুদ্ধে রায় ২০ সেপ্টেম্বর

অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরাফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে অপহরণের পর ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বরখাস্ত সাত সদস্যের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলা রায় ঘোষণার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ আদেশ দেন। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম আদেশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ জামিনে থাকা ডিবি পুলিশের সাত সদস্যকে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে রায় ঘোষণার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার সদর মডেল থানার পেছনের সড়ক থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যার হুমকি দিয়ে তাঁর স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তাঁরা। দেনদরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় গফুরের পরিবার। টাকা দেওয়ার পরদিন ২৪ অক্টোবর ভোরে গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। গফুরের স্বজনেরা ঘটনাটি মেরিন ড্রাইভে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকির দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জানান।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সেনাবাহিনী ওই নিরাপত্তাচৌকি বসিয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভে সেনাচৌকিতে পৌঁছালে তল্লাশি চালিয়ে মুক্তিপণের ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনাসদস্যরা।

এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদী হয়ে ডিবির এসআই মনিরুজ্জামান, আবুল কালাম আজাদ; এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজমকে আসামি করে মামলা করেন। ২০১৮ সালের আগস্টে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মামলার বাদী আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, বন্দুকযুদ্ধের ভয় দেখিয়ে তাঁর স্বজনদের কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন ডিবি পুলিশের ওই সাত সদস্য। টাকাগুলো জমি বন্দক ও ঘরের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। তখন মুক্তিপণের ১৭ লাখ টাকা দিতে না পারলে হয়তো মাদক কারবারি বলে তাঁকে হত্যা করা হতো। আইনের লোক হয়ে বেআইনি কাজে জড়িত হওয়ায় তাঁরা পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন। তিনি তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার পরপরই ডিবি পুলিশের ওই সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশও করে।