ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাই-মারধরের অভিযোগ কর্মীর, নেতার পাল্টা অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকাফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ শাখার এক কর্মী। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই কর্মী। অবশ্য অভিযোগটিকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে অভিযুক্ত নেতা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, তিনি নিজেই মারধরের শিকার হয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি–সংলগ্ন ফটকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক জুলফিকার রহমান। তিনি পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। আর অভিযোগকারী সংগঠনের বিজয় একাত্তর হল শাখার কর্মী কৌশিক হাসান উর্দু বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

জিডিতে কৌশিক হাসান বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি ও তাঁর বান্ধবী রিকশায় করে দোয়েল চত্বরে যাওয়ার সময় রাজু ভাস্কর্যের পেছনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলের শিক্ষার্থী জুলফিকার রহমান ও তাঁর সঙ্গে থাকা দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাঁদের রিকশা থামান। এরপর তাঁদের কাছে ডেকে রিকশায় জোরে হাসাহাসির অভিযোগ তুলে পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। একপর্যায়ে জোর করে তাঁদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি–সংলগ্ন ফটকের দিকে নিয়ে যান। এরপর তাঁর মুখে ও কানে জোরে জোরে কিলঘুষি ও থাপ্পড় মারতে থাকেন। ঘুষির আঘাতে তাঁর নাক দিয়ে রক্তপাত হয়। একপর্যায়ে তাঁর হাত থেকে ঘড়ি খুলে নিচে পড়ে গেলে জুলফিকার তা নিয়ে নেন।

একটি পর্যায়ে তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা বান্ধবী জুলফিকার ও তাঁর সহযোগীদের কাছে ভুল স্বীকার করে চলে আসতে চাইলে আবার মারধর করেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন অভিযোগকারী কৌশিক। তিনি বলেন, ফোনে খবর দিলে পরিচিত প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে এলে তিনি তাঁদের কাছে ঘটনা বলেন। ওই শিক্ষার্থীদের নিয়ে কেন দাঁড়িয়ে আছেন, সে অভিযোগ তুলে জুলফিকার ও তাঁর সঙ্গীরা তৃতীয় দফায় তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এমনকি তাঁর ওয়ালেট নিয়ে নেন। ওয়ালেটে জাতীয় পরিচয়পত্র, নগদ সাত হাজার টাকা, হলের পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল বলে দাবি করেন কৌশিক।

অভিযোগের বিষয়ে জুলফিকার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আসল ঘটনা তার ঠিক উল্টো। আমি নিজেই মারধরের শিকার হয়েছি। এ ঘটনায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করব। এরপর সংবাদ সম্মেলনও করব।’

এদিকে শাহবাগ থানায় জিডি হলেও বিষয়টি জানা নেই বলে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাজিরুর রহমান। তবে থানার এক উপপরিদর্শক জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।