ভূমির অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে ঘুষ চেয়ে হুমকি, প্রতারক গ্রেপ্তার

বাবু মিয়া। মনোয়ার হোসেন নামে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি
ছবি: সংগৃহীত

ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাউকে বদলি করা, আবার কারও বদলি ঠেকানোর কথা বলে মুঠোফোনে বিভিন্ন অঙ্কের ঘুষ চেয়ে আসছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী মনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। কেউ কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছেনও।

পরে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশের বিশেষায়িত অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটি ইউ) জানতে পারে এই নামে মন্ত্রণালয়ে কোনো অতিরিক্ত সচিব নেই, তিনি প্রতারক বাবু মিয়া। গতকাল বুধবার নীলফামারীতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বাবু মিয়া নিজেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মনোয়ার হোসেন পরিচয় দিয়ে সাভার উপজেলায় কর্মরত সার্ভেয়ার মো. আবদুল করিমকে ফোন করেন। তাঁকে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে কমিটি গঠন করে ১০৫ জন সার্ভেয়ারের ওপর নজরদারি করার দায়িত্ব তাঁকে (মনোয়ার) দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় আবদুল করিমেরও নাম আছে। তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে হলে টাকা দিতে হবে বলে ভয় দেখান। ভুক্তভোগী করিম ভয়ে মনোয়ারের দেওয়া অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান। পরে মনোয়ার ওই সার্ভেয়ারের কাছে আরও ৭০ হাজার টাকা দাবি করলে তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি তখন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।

এটিইউর অপারেশনস ও মিডিয়া অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার মো. ছানোয়ার হোসেন আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, বাবু মিয়া একই নম্বর থেকে গতকাল বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকায় কর্মরত একজন সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তাঁর সরকারি মুঠোফোন নম্বরে ফোন করে বলেন, তিনিসহ ৩৫ সহকারী কমিশনারকে (এসি) অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। বদলি বাতিল করতে ওই কমিশনারের কাছে তিনি অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে এক লাখ টাকা পাঠাতেও বলেন।

ছানোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীরা বিষয়টি এটিইউকে জানালে তারা তদন্তে নেমে জানতে পারেন অতিরিক্ত সচিব পরিচয় দেওয়া মনোয়ার হোসেন হলেন প্রতারক বাবু মিয়া। তিনি নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। পরে এটিইউ ওই নম্বর ট্র্যাক করে জানতে পারে বাবু মিয়া নীলফামারীতে আছেন। পরে জেলা পুলিশের সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাবু মিয়ার বিরুদ্ধে চুরি ও প্রতারণার দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তাঁর বাড়ি নীলফামারীর সদর থানার কচুকাটায় (বাজিত পাড়া)। গতকাল একজন ভুক্তভোগী তাঁর তার বিরুদ্ধে ঢাকার নিউমার্কেট থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেছেন।