কবর থেকে লাশ তোলা ও সিআইডি দিয়ে তদন্ত করানোর কথা বলে দুই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বগুড়া জেলার সদস্যরা তিন প্রতারককে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেনছবি: প্রথম আলো

কবর থেকে লাশ তোলার আদেশ দেওয়া, লাশের ময়নাতদন্ত করে দেওয়া ও মামলার সঠিক তদন্ত করার কথা বলে একটি পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা নেয় একটি প্রতারক চক্র। ওই পরিবারের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বগুড়া জেলার সদস্যরা তিন প্রতারককে শনাক্ত করেন এবং বুধবার রাতে কৌশলে জেলা কার্যালয়ে ডেকে এনে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. লিখন মিয়া (৩৩), তাঁর ছোট দুই ভাই মো. রানা মিয়া (৩০) ও মো. সুমন মিয়া (২৮)।

বৃহস্পতিবার সিআইডির বগুড়ার বিশেষ পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের জুলাইয়ে বগুড়ার গাবতলীর বাসিন্দা মাসুদ ফকিরকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় তাঁর মেয়ে তাসলিমা আক্তার বাদী হয়ে কয়েকজনকে আসামি করে গাবতলী থানায় হত্যা মামলা করেন।

সম্প্রতি মামলাটির তদন্ত শেষে গাবতলী থানা-পুলিশ আসামিদের বাদ দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এর বিরুদ্ধে তাসলিমা আদালতে নারাজি আবেদন করেন। সম্প্রতি আদালত মাসুদ ফকির হত্যা মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মাসখানেক আগে সিআইডি বগুড়া জেলা তদন্তের দায়িত্ব পায় এবং তারা মাসুদ ফকিরের লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে। পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে গ্রেপ্তার তিনজনসহ একটি প্রতারক চক্র মাসুদের মেয়ে তাসলিমার পিছু নেয়। তারা তাসলিমাকে বলে, লাশ তোলার আদেশ করানো, ময়নাতদন্ত করা ও সিআইডি দিয়ে সঠিক তদন্ত করার জন্য বিচারক, ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কর্মকর্তা তাদের পরিচিত। টাকা দিলে তারা এসব কাজ সহজে করিয়ে দিতে পারবে। প্রতারক চক্র বিভিন্ন সময় ও তারিখে বাদী তাসলিমার কাছ থেকে সুকৌশলে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। তাসলিমা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিক্রি এবং জায়গাজমি বন্ধক রেখে প্রতারক চক্রকে টাকা দেন। এরপরও প্রতারকেরা তাসলিমার কাছে আরও টাকা চাইলে তাসলিমা বুধবার সিআইডির কাছে অভিযোগ করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মোতাহার জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়ে বুধবার রাতে কৌশলে প্রতারক তিন ভাইকে ডেকে বগুড়ার সিআইডি কার্যালয়ে আনেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে আত্মসাৎ করা ২ লাখ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে তাসলিমার হাতে তুলে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত লিখন মিয়া ও তাঁর ছোট দুই ভাই মো. রানা মিয়া ও সুমন মিয়া এবং তাঁদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সিআইডির এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় প্রতারণার মামলা করেন। ওই মামলায় তিন ভাইকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী থানার কালাইহাটা সরকারপাড়ায়।