দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে সন্তান হারানো সেই বাবা এখন এলাকাছাড়া

ঢাকার উত্তরায় দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছিল স্কুলছাত্র আদনান কবির। বিচার শেষ হয়নি এখনো।

আদনান কবির

ঢাকার উত্তরায় ২০১৭ সালে দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছিল স্কুলছাত্র আদনান কবির। তার বাবা মো. কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি ছেলে হত্যার বিচার এখনো পাননি। আর কিশোর গ্যাংয়ের হুমকিতে তিনি উত্তরা ছেড়েছেন।

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছিল উত্তরায় আদনান হত্যার ঘটনায়। ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আদনানকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কের খেলার মাঠে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

র‌্যাব এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ‘ডিসকো বয়েজ’ ও ‘নাইন স্টার গ্রুপ’–এর আটজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। আদনানের বাবা কবির হোসেন ১ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মোট ২৬ আসামি। তাঁরা সবাই এখন জামিনে। আসামিরা কারাগার থেকে বেরিয়ে হুমকি দিতে থাকেন। এ কারণেই তিনি পরে উত্তরা ছেড়ে দেন।

আরও পড়ুন

পুলিশ ওই হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে। আদালতে এখন বিচারকাজ চলছে। আদনানের বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘আমাকে একাধিকবার সাক্ষী দেওয়ার জন্য ডেকেও সাক্ষী নেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও কোনো সহায়তা করেননি। তাই এখন আমি আদালতে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।’

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষী না নেওয়ার কোনো কারণ নেই। এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তিনি খোঁজ নেবেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

কিশোর গ্যাং এখনো আছে। তবে আগের তুলনায় কম। তাদের দমনে পুলিশ কাজ করছে।
পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. শাহজাহান

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ২০২২ সালের শেষের দিকের একটি প্রতিবেদন বলছে, তাদের উত্তরা বিভাগে সক্রিয় রয়েছে ১১টি কিশোর গ্যাং। পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, কিশোর গ্যাং এখনো আছে। তবে আগের তুলনায় কম। তাদের দমনে পুলিশ কাজ করছে।

পুলিশের হিসাব বলছে, ঢাকায় ২০২৩ সালে কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্বে ২৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আদনানের বাবা কবির হোসেন বলছিলেন, যদি ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো, তাহলে ঢাকায় এ ধরনের অপরাধী চক্রের এতটা বিস্তার ঘটত না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যাঁরা আদনানকে হত্যা করেছেন, তাঁরা এখন ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করছেন, আরও বেপরোয়া হয়েছেন।