বিনিয়োগের নামে প্রতারণা, হায়দারের ঢাকা ও সাভারে তিনটি পাঁচতলা বাড়ি

প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার চক্রের প্রধান (লাল বৃত্ত চিহ্নিত) মো. হায়দার আলীসহ চার সদস্যছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় একজন ব্যবসায়ী ১৬ কোটি টাকার চশমা, হাতঘড়ি ও ক্যামেরা কিনবেন। তাঁকে এসব পণ্য সরবরাহ করতে পারলে ৩০ শতাংশ লাভ হবে। তবে এর আগে ৭৫ লাখ টাকার পণ্য কিনে দেখাতে হবে তাঁকে।

ব্যবসায় বিনিয়োগের নামে এ রকম এক প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু বানাত একটি চক্র। বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের আশায় বিনিয়োগ করতেন কেউ কেউ। একপর্যায়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক চক্রটি। এর চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

আজ রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে চক্রটির প্রতারণা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ।

হারুন-অর রশীদ বলেন, গত শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও কলাবাগান এলাকা থেকে এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. হায়দার আলী (৬৪), মো. রেজাউল করিম (৩৭), মো. নাসির উদ্দিন (৪৯) ও মো. আবদুল কাদের (৫৬)। অভিযানে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ২০ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়।

ব্যবসায় বিনিয়োগের নামে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু বানাত একটি চক্র। বিপুল পরিমাণ অর্থ আয়ের আশায় বিনিয়োগ করতেন কেউ কেউ। একপর্যায়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক চক্রটি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কয়েকটি ধাপে প্রতারণার কাজ করে আসছিল চক্রটি। প্রথমে ভুয়া নাম–পরিচয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিস খোলে তারা। পরে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। একপর্যায়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয়ের পরামর্শ দেয় তাঁদের।

ডিবির প্রধান বলেন, একজন সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং ইসলামী ফাউন্ডেশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের অনুসন্ধানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। অনুসন্ধানে প্রতারণায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে।

হারুন-অর রশীদ বলেন, চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নতুন অফিস নিয়ে বিদেশি কোম্পানির কর্মচারী পরিচয়ে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস ছেড়ে পালান চক্রের সদস্যরা। নতুন এলাকায় আবার অফিস ভাড়া নিয়ে অন্য কারও সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেন।

ডিবি জানায়, প্রতারণার টাকায় সাভার ও ঢাকায় চক্রের প্রধান হায়দার তিনটি পাঁচতলা বাড়ি করছেন। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ বিভিন্ন থানায় ১০টির বেশি মামলা আছে। এর আগেও ডিবির হাতে একবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন তাঁরা।