যোগ-বিয়োগের ফাঁদে ফেলে মোবাইল অ্যাকাউন্টের পিন জেনে তুলে নেন টাকা

প্রতারণার মাধ্যমে মোবাইল অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ তুলে নেওয়ার ঘটনায় মো. সাজ্জাত হাওলাদার নামের এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশছবি: সংগৃহীত

সন্তান স্কুল ও কলেজে পড়ে এমন অভিভাবকদের ফোন করে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হবে বলে প্রথমে প্রলোভন দেখান চক্রের সদস্যরা। বিশ্বাস অর্জনের পর ফোন করে বিভিন্ন সংখ্যার সঙ্গে মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) নম্বরের যোগ-বিয়োগ করে ফলাফল জানাতে বলেন। যেহেতু সরাসরি পিন নম্বর চাইছে না, তাই সরল বিশ্বাসে যোগ-বিয়োগের পর প্রাপ্ত ফলাফল জানিয়ে দিচ্ছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা। অভিনব এই কৌশলে পিন নম্বর জেনে অভিভাবকের এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।

এক ভুক্তভোগী অভিভাবককে উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় মো. সাজ্জাত হাওলাদার (২৬) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে তিনটি মুঠোফোন ও তিনটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

ডিবি বলছে, গ্রেপ্তার সাজ্জাত ফরিদপুরের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্বল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা উপার্জনের জন্য এলাকার সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে মিলে মোবাইল অ্যাকাউন্টের টাকা আত্মসাতের কৌশল রপ্ত করেন সাজ্জাত। পরে তাঁরা সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী এক আইনজীবীর মেয়ে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। গত ২২ জানুয়ারি ওই আইনজীবীর ফোনে একটি বার্তা আসে। তাতে বলা হয়, ভালো ফলের জন্য তাঁর মেয়ে প্রতি মাসে ৫ হাজার ২০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাবে। এ জন্য একটি ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সে অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারি নির্ধারিত নম্বরে ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে বকশীবাজার শিক্ষা বোর্ডের অফিস বলে জানায়। এ সময় তাঁর মেয়ে প্রতি মাসে ৫ হাজার ২০০ টাকা করে সাত মাস এবং এক বছর পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত মাসিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাবে বলে ফোনে জানান চক্রের সদস্যরা।

হারুন অর রশীদ বলেন, চক্রের সদস্য ভুক্তভোগীর ব্যাংকের নাম, হিসাব নম্বর ও শাখার নাম জানতে চান। যে অ্যাকাউন্টে মেয়ের উপবৃত্তির টাকা জমা হবে, সে জন্য একটি এমএফএস নম্বর ও মেয়ের মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর জানতে চান। একপর্যায়ে ফোন করে মোবাইলে ক্যালকুলেটর দেখতে বলেন। নির্দিষ্ট একটি নম্বরের সঙ্গে অপর একটি নম্বর এবং ভুক্তভোগীর পিন যোগ করে যোগফল জানতে চাইলে ভুক্তভোগী যোগফল জানান। এভাবে কৌশলে পিন নম্বর জেনে টাকা হাতিয়ে নেন চক্রের সদস্যরা।