যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যপ্রবাসীদের নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা করতেন তিনি

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসীদের নামে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে তাঁদের স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার মিজানুর রহমানের (৩৪) বাড়ি রংপুরের কোতোয়ালি থানার চেকপোস্ট মোড়ে ধাপলাল কুঠিতে। বর্তমানে তিনি কারাগারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ আজ মঙ্গলবার মিজানুরকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মিজানুর প্রতারক চক্রের একজন সদস্য। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসীদের ফেসবুক আইডি থেকে নাম, পরিচয় ও ছবি সংগ্রহ করে তাঁদের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলতেন। আবার তিনি কখনো কখনো তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নিতেন। মিজানুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার পর ওই ব্যক্তির পরিচিতজনদের কাছে ফ্লাইটের টিকিট কেনার টাকা নিশ্চিত করতে বার্তা পাঠিয়ে সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দিতেন। পরিচিতজনেরা ওই বার্তা বিশ্বাস করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠালে তিনি তা নিয়ে নিতেন।

মিজানুর রহমান এভাবে প্রতিদিন ৮-১০টি অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটের টিকিটের দাম মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিতেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আজাদ। তিনি জানান, হাবিবুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগী ১৪ আগস্ট বাদী হয়ে রমনা থানায় মিজানুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় ১৬ আগস্ট রংপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের অনুমতিতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর মিজানুরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বাদীর বরাত দিয়ে ডিবির কর্মকর্তারা জানান, হাবিবুর রহমানের বন্ধু ইউসুফ খান অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। গত ২৮ এপ্রিল ইউসুফ খানের নামে খোলা একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে বার্তা পাঠানো হয়, অস্ট্রেলিয়া থেকে তিনি দেশে আসছেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার বিমান টিকিট নিশ্চিত করতে ট্রাভেল এজেন্সির নাম করে একটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দিয়ে তাতে ১৮ হাজার ৮০০ টাকা পাঠাতে বলা হয়।

হাবিবুর সেই নম্বরে টাকা পাঠান। পরদিন ২৯ এপ্রিল তিনি দেখতে পান, বন্ধুর পরিচয়ধারী ওই ফেসবুক আইডির সব বার্তা মুছে ফেলা হয়েছে। হাবিবুরের সন্দেহ হলে তিনি তাঁর বন্ধুর মূল আইডিতে তাঁর অবস্থান জানতে চাইলে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন বলে জানান। তখন হাবিবুর বুঝতে পারেন, প্রতারকেরা তাঁর বন্ধুর নাম ও ছবি অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করে তাঁর (বন্ধু) পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।