মুঠোফোন চুরি–ছিনতাইকারী চক্রের ১৫ জন গ্রেপ্তার

মুঠোফোন চুরি–ছিনতাইয়ে জড়িত এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে চোরাই মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনকারী চক্রের ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৭৯টি স্মার্টফোন ও ২৪টি বাটনফোন জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে যাত্রাবাড়ী, পল্পবী, সাইনবোর্ড ও চিটাগাং রোড এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনারের দায়িত্বে থাকা পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মশিউর রহমান আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, রমজান মাসে ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে, ফজরের নামাজ পড়ে ধনী থেকে নিম্নবৃত্ত অনেকেই ঘরের দরজা খুলে ঘুমিয়ে পড়েন। নিরাপত্তাকর্মীরাও ঘুমিয়ে যান। সুযোগ বুঝে কিছু মুঠোফোন চোর দরজা খোলা পেয়ে ঢুকে পড়ে এবং নগদ টাকা ও মুঠোফোন চুরি করে নেয়। অনেক যাত্রী গণপরিবহন ও প্রাইভেট কারে যাতায়াতের সময় খোলা জানালার পাশে বসে অসতর্কভাবে মুঠোফোনে কথা বলতে থাকেন বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা অতর্কিত হ্যাঁচকা টান মেরে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। তা ছাড়া তারা বিভিন্ন শপিং মল, বিপণিবিতানে আসা নারী-পুরুষের পকেট ও ব্যাগে কৌশলে চাপ দিয়ে মুঠোফোন ওপরে উঠিয়ে চুরি করে নিয়ে যায়।

পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, উদ্ধার করা মুঠোফোনের মধ্যে নামকরা কোম্পানি এবং কম দামি বিভিন্ন বাটন ফোনও আছে। চোরাই মুঠোফানগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনের ফুটপাত, স্টেডিয়াম মার্কেটের ফুটপাত, গুলিস্তান আন্ডার পাসে ৫০০ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তাঁরা। এই ক্রেতারা আবার রাজধানীর মোতালিব প্লাজা, উত্তরার মাসকট প্লাজা, মিরপুরের শাহ আলী প্লাজা, চট্টগ্রাম রোডের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে দেন। দোকানের লোকজন এগুলো কেনার পর চীনা বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করেন। পরে অন্য খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন।এ ছাড়া কখনো মুঠোফোনের ডিসপ্লে, ক্যামেরা কেসিং, মাদারবোর্ড, ব্যাটারি ইত্যাদি আলাদা আলাদা করে খুচরা যন্ত্র হিসেবে চড়া দামে বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। আইএমইআই পরিবর্তন অথবা খুচরা যন্ত্রাংশে রূপান্তরিত করে মুঠোফোন বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে বেশির ভাগ সময়ই চুরি হওয়া, হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোন উদ্ধার করে আর ভুক্তভোগীদের কাছে দেওয়া সম্ভব হয় না।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে কারও নামে ১৭টি, কারও নামে ১১টি, কারও নামে ৮-৯টি করে চুরি ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরি ও ছিনতাই করতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।