জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান, গ্রেপ্তার ৯

জব্দ করা জাল নোটসহ অন্যান্য সামগ্রী
ছবি: ডিএমপি নিউজের সৌজন্যে

পুরান ঢাকার কাশ্মীরি লেন এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। সেখান থেকে চক্রের প্রধান বাবুল মিয়াসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ৮২ লাখ টাকার জাল নোট জব্দ করা হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে পাঁচ কোটি টাকার জাল নোট ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল এই চক্রের।

গতকাল রোববার এ অভিযান চালানো হয়। আজ সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবি প্রধান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লালবাগ বিভাগের গোয়েন্দা দল পুরান ঢাকার কাশ্মীরি লেন এলাকার একটি ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে জাল নোট নিয়ে বের হওয়ার সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে তিনতলায় বাবুল মিয়া বাড়ির একটি অংশে থাকতেন, অন্য অংশে জাল নোট তৈরি হতো। আর ষষ্ঠ তলায় রাখা হতো প্রস্তুত করা জাল নোট। এ ঘটনায় মহাজন বাবুলসহ নয়জনকে আটক করা হয়। পরে লালবাগ থাকায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ডিবি বলছে, দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসা করে চক্রের প্রধান বাবুল মিয়া গাড়ি–বাড়ির মালিক হয়েছেন। একাধিক বিয়ে করেছেন। স্ত্রীদেরও জাল টাকার ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন। বাবুল আগেও ছয়বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। জামিনে বেরিয়ে আবারও জাল টাকার কারবারে জড়িয়েছেন তিনি।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়ার তথ্যের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তারের পর করোনাকালে বাবুল জামিনে বের হন। জামিন পেতে তিনি উচ্চ সুদে ১১ লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে তিনি আবারও জাল টাকার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

ইতোমধ্যে চক্রটি দুই কোটি টাকার নোট বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার জাল নোট তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। তাঁরা খুচরা দোকানে গিয়ে জাল টাকা দিয়ে পণ্য কিনে নিয়ে আসতেন। অভিযান চলাকালে সেখান থেকে জাল নোট দিয়ে কেনা কম দামের শাড়ি, লুঙ্গি, গামছাও উদ্ধার করা হয়।

বাবুল ছাড়া গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন বাবুলের স্ত্রী মিনারা খাতুন, সাইফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মিলি খাতুন, নারী কারিগর আলপনা আক্তার এবং সহযোগী ইব্রাহিম,আফজুল ওরফে রাসেল, হাবিবুল্লাহ ও দুলাল হোসেন।