রাজধানীতে বিভিন্ন কিশোর গ্যাংয়ের ৩৪ সদস্য গ্রেপ্তার

রাজধানীতে বিভিন্ন কিশোর গ্যাংয়ের ৩৪ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল বুধবার তেজগাঁও, কলাবাগান, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুর ও ডেমরায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২৭টি বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত ১৭টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলি র‍্যাব-৩–এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩–এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত র‍্যাব-৩–এর বিভিন্ন দল পৃথকভাবে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে কিশোর গ্যাং ‘অটো সজল’ গ্রুপের আটজন, ‘খোকন’ গ্রুপের সাতজন, ‘ইউনুস’ গ্রুপের  পাঁচজন, ‘আনোয়ার’ গ্রুপের চারজন, ‘মানিক’ গ্রুপের পাঁচজন এবং ‘রাহুল’ গ্রুপের পাঁচজন।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা কিশোর গ্যাংয়ের মদদদাতা ও সদস্যরা পেশায় অটোরিকশাচালক, ভাঙারি ব্যবসায়ী, দিনমজুর, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণশ্রমিক, পুরোনো মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা হলেও আড়ালে তাঁরা মূলত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে র‍্যাবের এই কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিটি কিশোর গ্যাং গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য থাকেন। অটো সজল গ্রুপটি মো. সাদ্দাম হোসেনের মদদে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তাঁরা ২-৩টি গ্রুপে বিভক্ত হন। খোকন গ্রুপটি গ্রেপ্তার রাজার মদদে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে।

এই দুই গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যাত্রাবাড়ী, গেন্ডারিয়া, বংশাল, চকবাজারসহ আশপাশ এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তাঁরা পথচারীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করেন। এ ছাড়া তাঁরা মাদক সেবনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, তেজগাঁও ও কলাবাগান এলাকায় ইউনুস এবং আনোয়ার গ্রুপ দুটি দীর্ঘদিন ধরে ইউনুস এবং আনোয়ারের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। তাঁরা রাজধানীর তেজগাঁও, আগারগাঁও, কলাবাগান, খিলগাঁও এবং এর আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মারামারিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এই গ্রুপের সদস্যরা সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল দিয়ে বিকট শব্দ করে তেজগাঁও উড়ালসড়ক এলাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।

মানিক গ্রুপ রাজধানীর শ্যামপুর, কদমতলী, যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় মো. মানিকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত রাহুল গ্রুপ রাহুল গাজীর নেতৃত্বে ডেমরা এলাকায় তাঁদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। তাঁরা এসব এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছেন। রাহুল গাজীর নেতৃত্বে তাঁর গ্রুপটি ২৫-২৬ দিন আগে ডেমরা এলাকায় নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাই করছিলেন। এ সময় আরমান নামের এক কিশোর বাধা দিলে তাঁরা আরমানকে ছুরিকাঘাত করেন।