লোকজনকে তুলে নিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে মুক্তিপণ আদায় করেন তাঁরা
কখনো অপহরণ করে আবার কখনো সখ্য গড়ে তুলে লোকজনকে নিয়ে যাওয়া হয় বাসায়। এরপর সেখানে থাকা নারীদের সঙ্গে অপহৃত ব্যক্তিদের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। সেই ছবি ভুক্তভোগীর পরিবার কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এমন চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশ।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন—জাহেদুল আলম, বেলাল হোসেন, মো. কাউসার ও মো. ইমন। আজ সোমবার সকালে নগরের হালিশহর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রোববার নগরের কোতোয়ালি থানার কে সি দে রোডের হাজারী গলির মুখ থেকে এক ব্যক্তিকে অজ্ঞাতপরিচয়ে কিছু ব্যক্তি তুলে নিয়ে যান। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ের জামাই থানায় মামলা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িত দুজনকে শনাক্ত করে। তাঁদের নাম জাহেদ ও বেলাল। গতকাল ভোররাত চারটার দিকে কৌশলে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে হালিশহরের মুহুরীপাড়ার উত্তর আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে তখন চক্রের আরও চারজন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইয়াছমিন আক্তারসহ দুজন কৌশলে পালিয়ে গেলেও গ্রেপ্তান হন কাউসার ও ইমন।
ওসি জাহিদুল কবির বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা নগরের বিভিন্ন এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। সাধারণ পথচারীদের মধ্যে সাদাসিধে লোকজনকে লক্ষ্য করে অপহরণ করে নিয়ে যান তাঁরা। এরপর সেখানে থাকা নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে তা ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করেন তাঁরা। লোকলজ্জার ভয়ে লোকজন এসব বিষয়ে থানায় মামলা করেন না। যার কারণে আসামিরা দীর্ঘদিন থেকে এই অপরাধ করে গেলেও ধরা পড়েনি।
অভিযান পরিচালনাকারী কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, পলাতক মনোয়ার হোসেন ও ইয়াছমিন আক্তার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে চার মাস আগে বাড়ির মালিক আবদুল মান্নানের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। ওই বাসায় লোকজনকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। বিষয়টি বাড়ির মালিকও জানতেন না বলে পুলিশকে জানান। আজ পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন।