মোটরসাইকেলের পেছনে ঝুলে ছিনতাইকারীকে ধরলেন তরুণ

ঝুঁকি নিয়ে ছিনতাইকারীকে ধরতে গিয়ে হাঁটু ছিলে গেছে সাজেদুর রহমানের
ছবি: সংগৃহীত

রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন কলেজশিক্ষার্থী সাজেদুর রহমান (রুবায়েদ)। এ সময় ছিনতাইকারী এসে তাঁর মুঠোফোনটি টান দেন। সাজেদুর মুঠোফোন না ছাড়লে তাঁর হাতে ছুরি মারেন ছিনতাইকারী। তখন মুঠোফোনটি ছাড়তে বাধ্য হন। তবে দ্রুতই নিজেকে সামলে ছিনতাইকারীর মোটরসাইকেলের পেছনে ধরে ফেলেন। কিছুদূর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান ছিনতাইকারী। ততক্ষণে সাজেদুরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর উত্তরা এলাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের স্লুইসগেট এলাকায় এ ঘটনার পর ছিনতাকারী পায়েল হোসেনকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয় বলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানিয়েছেন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি ছোরা উদ্ধার ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়।

ওসি মোহাম্মদ মহসীন প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী সাজেদুর কুমিল্লার অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করেন।

ছিনতাইয়ের সময় গ্রেপ্তার পায়েল হোসেন, তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাও রয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

অফিসে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন বলে জানিয়েছেন সাজেদুর। তিনি আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুঠোফোনটি আমার বাবা কিনে দিয়েছে। ছিনতাই হলে আমার পক্ষে আরেকটা ফোন কেনা কষ্টকর।

তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি ছিনতাইকারীকে ধরেছি।’ ছিনতাইকারীর মোটরসাইকেলের পেছনে ঝুলে কিছুদূর যাওয়ায় তাঁর হাঁটুতে ছিলে গেছে।

এর আগে গত ২১ জুলাই রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাসের মধ্যে বসে থাকা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মুঠোফোন ছিনতাই হয়। ওই ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে ধরতে পারেননি তিনি। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে আরেকজনের মুঠোফোন ছিনিয়ে পালানোর পথে আরেক ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন তিনি। পরে ওই ছিনতাইকারীর আরেক সহযোগীকে ধরে দুজনকে একসঙ্গে পুলিশে দেন ওই ছাত্রী।

আরও পড়ুন

এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসার পর বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারীকে ধরেছে পুলিশ। ওই ছাত্রীর মুঠোফোন উদ্ধার ও সেটি ছিনিয়ে নেওয়া ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, ছিনতাইকারী পিয়ালের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় একটি দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলা রয়েছে।

সম্প্রতি সেই মামলায় জামিনে বেরিয়ে ছিনতাইয়ে নামেন পিয়াল। তাঁর বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া এলাকায়।