আবদুল হাসান চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কলাবাগানের হাতিরপুল এলাকা থেকে গুলিভর্তি পিস্তল, ককটেলসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুল হাসান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।

গ্রেপ্তারের ছয় দিন পর আজ সোমবার এক অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর–রশীদ।

ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা ছাড়াও ডিবির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার রিফাত রহমান শামীম ও মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদসহ দুই বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে হারুন-অর-রশীদ দাবি করেন, কে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের, সেটি মুখ্য বিষয় নয়। অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অস্ত্রধারীরা কোনো দলের হতে পারে না। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

‘কোনো দলের নেতা বা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়’ দাবি করে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘যারা চোরাকারবারি, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ও ব্যবসা করবে তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের অভিযান। যদিও অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক নেতা–কর্মীকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, এটা রাজনৈতিক কথাবার্তা। আমরা আমাদের আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। ছাত্রদলের গ্রেপ্তার নেতারা যে ১১টি অস্ত্র কেনার জন্য অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে ফরমাশ করেছে, সেই প্রমাণ রয়েছে।’

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ডিবি শুধু ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করেনি। এর আগে শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাড্ডা থানায় অস্ত্র মামলায় নাসির, কাউসার, জীবনকে গ্রেপ্তার হয়েছিল। তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা। কিছুদিন আগে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ হত্যা মামলার আসামি আসাদুজ্জামানকে দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মতিঝিলের জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় অস্ত্রসহ ছাত্রলীগের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখন তো কেউ প্রশ্ন তোলেননি।

ডিবি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার তাঁকে আটকের পরের দিন তাঁর বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে তাঁকে দুই দফায় চারদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আজ রিমান্ডের শেষ দিন। আগামীকাল মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন

ছাত্রদলের সেই ৬ নেতাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল ডিবি

১৯ আগস্ট ঢাকার লালবাগ থেকে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৭টি গুলিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর শাখা ছাত্রদলের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির গুলশান বিভাগ। পরের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি জানায়, ছাত্রদলের ছয় নেতাসহ বিএনপির মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদসহ ১২ জনকে নাইটিঙ্গেল মোড় ও বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ছাত্রদলের ছয় নেতা
ছবি: সংগৃহীত

অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে গত শনিবার এক বিবৃতি পাঠিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদাপোশাকধারীরা ছয় ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে গেছেন।

ডিবির সংবাদ সম্মেলনের চার দিন পর বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতারা। সেখানে তাঁরা ছাত্রদলের নেতাদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের যে দাবি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্প্রতি করেছে, তাকে ‘দুর্বল স্ক্রিপ্টের নাটক’ বলে অভিহিত করেন।