ভেপ ও ই–সিগারেটে ছড়াচ্ছে নতুন মাদক এমডিএমবি, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে অদৃশ্য বাজার: ডিএনসি
ভেপ ও ই-সিগারেটের মাধ্যমে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন মাদক ‘এমডিএমবি’। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই মাদক পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
এমডিএমবি মাদকের বড় একটি চালান জব্দ করেছে ডিএনসি। মূল হোতাসহ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে তারা।
ডিএনসি বলছে, মালয়েশিয়া থেকে এই মাদক আসত। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপকে ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে এই চক্র ব্যবহার করত।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলস, মার্কেটিং কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস (২৭) এবং সম্প্রতি ভারতে পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশ ব্যবসা শুরু করা আশরাফুল ইসলাম (২৫)। তাঁদের কাছ থেকে ৩৪০ মিলি এমডিএমবি, সিবিডি মিশ্রিত গাঁজার চকলেট, এমডিএমবি গ্রহণে ব্যবহৃত ভেপ ডিভাইস, এমডিএমবি ব্যবহারের ই-লিকুইড এবং বিক্রির জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার উদ্ধার করা হয়েছে।
হাসান মারুফ বলেন, ই-সিগারেট এবং ভেপে সাধারণত নিকোটিন বা তামাকজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হলেও সম্প্রতি এতে নতুন ধরনের সাইকোঅ্যাকটিভ পদার্থ (এনপিএস), ওপিয়য়েডসসহ বিপজ্জনক মাদক ‘এমডিএমবি’ মেশানো হচ্ছে। এমডিএমবি ভয়ংকর তরল সিনথেটিক মাদক যার মাত্র কয়েক ফোঁটা স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই মাদক দ্রুত নেশার আসক্তি সৃষ্টি করে, যা হ্যালুসিনেশন, আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ঘটায়।
বাজারজাত করার পদ্ধতি সম্পর্কে হাসান মারুফ বলেন, চক্রটি গোপনে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপকে ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করত। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে সংকেতপূর্ণ পোস্ট দিয়ে মাদক বিক্রি করত। আগ্রহী ক্রেতারা ইনবক্সে মেসেজ করলে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দাম নির্ধারণ ও সরবরাহ নিশ্চিত হতো। অবস্থান শেয়ার, লাইভ ট্র্যাকিং ও বিশেষ ইমোজি ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন হতো, যা দেখে সাধারণ ব্যবহারকারী বুঝত না এটি মাদক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুসারে মামলা করা হয়েছে।