বিয়ের কথা বলে ডেকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা: র‍্যাব

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলেন এনামুল সানা (ডান থেকে দ্বিতীয়) ও সোহাগ রানাকে (ডান থেকে তৃতীয়) হাজির করা হয়। কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ১২ ডিসেম্বরছবি: র‍্যাবের সৌজন্যে

তিন দিন আগে ঢাকার সাভারে বংশাই নদ থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তরুণীর পরিচয় পাওয়ার পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র‌্যাব জানিয়েছে, বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে তাঁকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যার শিকার নারীর নাম রুবিনা খাতুন (২৪)। তিনি নরসিংদীর পলাশে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। গ্রেপ্তার দুজন হলেন এনামুল সানা (২৭) ও সোহাগ রানা (২৮)। গতকাল সোমবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত শনিবার বিকেলে সাভারের আশুলিয়ায় বংশাই নদ থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তিনি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার দোলাপাড়া গ্রামের আবদুল ওয়ারেছের মেয়ে রুবিনা খাতুন। রুবিনা নরসিংদীর পলাশে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

প্রায় ছয় মাস আগে এনামুলের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুবিনার পরিচয় হয় উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, এনামুলও একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। এখন তিনি ভাড়ায় নিজের মোটরসাইকেল চালান। এনামুল বিভিন্ন সময় রুবিনাকে বেশি বেতনে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশুলিয়ায় আসতে বলতেন। ৩ ডিসেম্বর এনামুলের স্ত্রী ও সন্তান খুলনার পাইকগাছায় গ্রামের বাড়িতে চলে যান। ওই দিনই এনামুল চাকরি ও বিয়ের কথা বলে রুবিনাকে আশুলিয়ায় ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

র‍্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল-মঈন বলেন, রুবিনা বারবার বিয়ের জন্য এনামুলকে চাপ দিলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ৮ ডিসেম্বর বিকেলে আবারও বিয়ের জন্য চাপ দিলে ঝগড়ার একপর্যায়ে রুবিনাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন এনামুল।

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, রুবিনাকে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে এনামুল দূরসম্পর্কের আত্মীয় ও বন্ধু সোহাগকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। ওই দিনই (৮ ডিসেম্বর) রুবিনার লাশ গুম করতে নদীতে ফেলার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। দিবাগত রাত তিনটার দিকে দুজন মিলে রুবিনার লাশ চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে বাসার নিচে নামিয়ে আনেন। তারপর তাঁরা মোটরসাইকেলে করে লাশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বংশাই নদের ওপর রাঙ্গামাটি সেতুতে যান। সেতুর ওপর থেকে রুবিনার লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনামুল ছয় বছর আগে খুলনা থেকে ঢাকায় এসে আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারসহ বসবাস করছিলেন। খুলনার পাইকগাছা থানায় শিশু অপহরণ, চুরি ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। এনামুলের বন্ধু সোহাগ বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।