নিমেষে উধাও ৪৮ হাজার টাকা, প্রতারণার শুরু বস্তিবাসীর আঙুলের ছাপ দিয়ে

প্রতীকী ছবি

ঢাকার বিভিন্ন বস্তির বাসিন্দাদের আঙুলের ছাপ ও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে মুঠোফোনের সিম নিবন্ধন করতেন তাঁরা। পরে সেই সিম ব্যবহার করে খোলা হতো মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেনের অ্যাকাউন্ট। ওই অ্যাকাউন্ট দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হতো বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, রোববার রাজধানীর মিরপুর ও ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মূল হোতা খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি একটি মুঠোফোন অপারেটরের মার্কেট অপারেশন ডিস্ট্রিবিউটরের এজেন্ট।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন মো. ফয়সাল হাসান (২৪), আনোয়ার পারভেজ ভূঁইয়া (২৫), মো. মমিনুল ইসলাম (২৯) ও মো. নজরুল ইসলাম (৪০)। তাঁরা সবাই একটি মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবার এজেন্ট ও দোকানদার। তাঁদের কাছ থেকে ৫৪টি সিম উদ্ধার করা হয়েছে।

মাহতাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ২ ফেব্রুয়ারি মাহতাফ তাঁর আর্থিক লেনদেন সেবার অ্যাকাউন্টে ১২ হাজার টাকা জমা (ক্যাশ ইন) করেন। পরে ওই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন তাঁকে ফোন করে জানান, ক্যাশ ইন করার সময় একটি ভুল হয়েছে। এতে তাঁর অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এ সময় কর্মকর্তা পরিচয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, বন্ধ অ্যাকাউন্টটি চালু করার জন্য মাহতাফের নম্বরে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠানো হয়েছে। তাঁকে ওই ওটিপি নম্বরটি বলতে বলা হয়। ওটিপি বলার পর মাহতাফ দেখতে পান, তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে ৪৭ হাজার ৯৪০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি থানায় অভিযোগ করেন।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার খোরশেদ আলম বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে সিম বিক্রি করেন। এ সুবাদে তিনি বিভিন্ন বস্তি এলাকায় গিয়ে কৌশলে বাসিন্দাদের আঙুলের ছাপ ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। এসব তথ্য দিয়ে সিম খুলে মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবার এজেন্ট আনোয়ার পারভেজ ও ফয়সাল হাসানের কাছে বিক্রি করতেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, একটি সিম সাধারণত ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও খোরশেদ প্রতারক চক্রের সদস্যদের কাছে বিক্রি করতেন ২০০ টাকায়। এসব সিম আবার ৩০০ টাকায় কিনতেন চক্রের আরেক সদস্য মোমিনুল ইসলাম। পরে এসব সিম থেকেই মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবার এজেন্ট ও কর্মকর্তা সেজে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো।