র‍্যাবের পোশাক পরে লুট করা হচ্ছে টাকা, প্রতারকদের খুঁজছে পুলিশ

প্রতীকী ছবি

র‌্যাবের পোশাক পরে পথচারীদের গতিরোধ করে তারা বলে, আপনার নামে হত্যা মামলা আছে। তারপর জোর করে গাড়িতে তুলে হাত, চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলা হয়। মারধর করে লুটে নেওয়া হয় সবকিছু। এমন একটি প্রতারক চক্রকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত দেড় মাসে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় এমন অন্তত পাঁচটি ঘটনার খোঁজ পেয়েছে পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চল।

মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে প্রথম আলোকে বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে মো. ইস্রাফিল নামের এক ব্যক্তি শ্যামলী থেকে লেগুনায় করে মোহাম্মদপুরের রিংরোডে একটি ব্যাংকে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। রিংরোডে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে দুই ব্যক্তি তাঁকে একটি গাড়িতে তুলে নেয়। সব লুট করে তাঁকে শেরেবাংলানগর এলাকায় ফেলে যায়। এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে এমন আরও কয়েকটি লুটের ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। চক্রের সদস্যরা নিজেদের র‌্যাব পরিচয় দিলেও তারা বাহিনীটির সদস্য নয়।

ইস্রাফিলের সঙ্গে ওই ঘটনার পর তাঁর ভগ্নিপতি আবু তালেব মোরশেদ মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। তিনি বলেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী। ইস্রাফিল তাঁর ব্যবসার কাজে সহায়তা করেন। ঘটনার দিন র‌্যাবের পোশাক ও ওয়াকিটকি হাতে এক ব্যক্তি ইস্রাফিলকে লেগুনা থেকে নামায়। আরও দুই ব্যক্তি একটি প্রাইভেট কার থেকে নেমে আসে। তারা ইস্রাফিলকে গাড়িতে তুলে হাতকড়া লাগায়। গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে সব টাকা লুট করে নেয়। গাড়িতে র‌্যাবের পোশাক পরা অন্তত চারজনকে দেখতে পেয়েছিলেন ইস্রাফিল।

মোহাম্মদপুর অঞ্চল পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, একই কৌশলে গত ৭ আগস্ট ঢাকার উত্তরায় সোনারগাঁ জনপথ সড়ক থেকে আশিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা লুট করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর এক ব্যক্তিকে একই কৌশলে অপহরণের চেষ্টা করে প্রতারক চক্র। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে চক্রের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের অর্থ তুলেছেন বা জমা দিতে যাচ্ছেন—এমন ব্যক্তিরাই এই চক্রের মূল লক্ষ্য।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সন্ত্রাসী ও প্রতারক চক্র প্রতারণা করছে। র‌্যাবের অভিযানে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি প্রতারক ধরা পড়েছে। এ ধরনের প্রতারণা র‌্যাব সময় সময় গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে। র‌্যাব পরিচয়ে যারা এ ধরনের প্রতারণা করছে, তাদের খুঁজে বের করা হবে। এমন কর্মকাণ্ডে র‌্যাবের কোনো সদস্যের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।