মধুপুরে বনে বসে পর্নো সাইট বানাতেন তাঁরা

টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে পর্নো সাইট বানিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)
ছবি: সিআইডির সৌজন্যে

টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে পর্নো সাইট বানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি।

সিআইডি বলছে, আমেরিকার জনপ্রিয় ক্লাসিফায়েড প্রাপ্তবয়স্কদের সাইটের আদলে পর্নো বা প্রাপ্তবয়স্কদের সাইট তৈরি করে প্রতারণা করে আসছিলেন তাঁরা। এভাবে সহজে রাতারাতি বিপুল টাকার মালিক হয়ে তাঁরা মাদকদ্রব্য, জুয়াসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।

সিআইডি সূত্র জানায়, সিআইডির অভিযানে মো. হুমায়ুন কবির, রুবেল আহমেদ, মো. সেলিম রানা, সানি আহমেদ, মো. রাজু আহমেদ, মো. রাকিব খান ও মো. আল-আমিন হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের কাছ বিভিন্ন ডিজিটাল যন্ত্র জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডি জানায়, মার্কিন মডেল, পর্নো তারকাদের ছবি, ভিডিও বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে কৌশলে সংগ্রহ করে প্রাপ্তবয়স্কদের ডেটিং সাইটে ইন্টারনেট প্রটোকল ঠিকানা (আইপি) লুকিয়া পোস্ট দিতেন তাঁরা। এরপর ‘টেক্সট নাউ’ নামের ভার্চ্যুয়াল নম্বর সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতারকেরা নারী সেজে হাজির হতেন। কেউ ওই নারীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁরা ডলার দাবি করতেন। ছবি ও ভিডিও শেয়ারের পরও অনেক গ্রাহক ভিডিও বা ভয়েস কলে সত্যতা যাচাই করতে চাইতেন। তখন রোবট সফটওয়্যার দিয়ে ভয়েস বা ভিডিও কল দেওয়া হতো। তাতেও গ্রাহক সন্তুষ্ট না হলে ভাড়াটে নারীদের হাজির করে প্রতারকেরা কথা বলাতেন। এরপর গ্রাহকের কাছ থেকে কিছু ডলার নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতেন।

সিআইডি আরও জানায়, প্রতারক চক্রের সদস্যরা ডলার গ্রহণ করতেন বিভিন্ন ক্যাশ অ্যাপ, কার্ড বা বিটকয়েনের মাধ্যমে। এরপর বিশেষ কায়দায় ডিজিটাল পেমেন্ট সার্ভিসের অ্যাকাউন্ট খুলে ডলার বিটকয়েন বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তরিত করতেন। এ ছাড়া প্রতারক চক্রের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে সম্পত্তি কেনাবেচা, বাড়িভাড়া বা রিয়েল এস্টেট সাইটে গিয়ে আইপি লুকিয়ে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিতেন। জমি ও বাড়ি কেনাবেচার নামে অগ্রিম ডলার নিয়ে কেটে পড়তেন তাঁরা।