টাকার বিনিময়ে মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর বদলে দিতেন সাইফুল

গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

চুরি ও ছিনতাই হওয়া মুঠোফোনের শনাক্তকরণ (আইএমইআই) নম্বর দুই মিনিটেই পরিবর্তন করতেন সাইফুল ইসলাম (৩১)। এ জন্য মুঠোফোনপ্রতি ৫০০ টাকা নিতেন। আর দামি ব্র্যান্ডের মুঠোফোন হলে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা নিতেন।

এমন অপরাধের অভিযোগে গতকাল বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার মৌসুমী আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ২০১৯ সালে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম নগরের অলংকার মোড়ের একটি শপিং কমপ্লেক্সে নতুন ও পুরোনো মুঠোফোন কেনাবেচা এবং মেরামতের দোকান আছে সাইফুলের। ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের দুই নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ওই দুই বিদেশি বন্ধুর সহায়তায় মাত্র দুই মিনিটেই মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতেন তিনি।

আইএমইআই বা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি নম্বর সাধারণত একটি ১৫ ডিজিটের নম্বর। তৈরির সময়ই প্রতিটি মুঠোফোনে স্বতন্ত্র এ নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে কোনো মুঠোফোনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। মুঠোফোন হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে এই আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে সাধারণত সেটির অবস্থান খুঁজে বের করা সম্ভব হয়।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মো. আলী হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার সাইফুলের কাছ থেকে ৫২টি মুঠোফোন উদ্ধার হয়েছে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ও সফটওয়্যার বিষয়ে তিনি দক্ষ। বিদেশেও তাঁর দক্ষ সহযোগী বন্ধু আছে। নিজে মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতে না পারলে সহযোগী বন্ধুদের সহায়তা নিতেন। এ জন্য সাইফুল তাঁদের অর্থ দিতেন।

আলী হোসেন বলেন, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন সাইফুল। এরপর কিছুদিন শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন চাকরি করেন। শিক্ষকতা করতে গিয়ে মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর পাল্টানোসহ কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে খুবই দক্ষ।

পুলিশের এই কমকর্তার ভাষ্যমতে, আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় চুরি ও ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন সহজে উদ্ধার করতে পারে না পুলিশ।