জিএমপি কমিশনারের গাড়ির অর্থের উৎস অনুসন্ধানে আবেদন
গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মো. নাজমুল করিম খানের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সাদা রঙের গাড়ি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কি না, তা অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত আবেদন জানিয়েছেন দুজন আইনজীবী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক চেয়ারম্যানের কাছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাদিম মাহমুদ ও ইয়াছিন আলফাজ এই লিখিত আবেদন জমা দেন। এতে ৩০ দিনের মধ্যে বিষয়টি অনুসন্ধান শুরুর আবেদন জানানো হয়েছে।
২৪ আগস্ট প্রথম আলোতে ‘পুলিশ কমিশনার থাকেন ঢাকায়, রাস্তা বন্ধ করে ঢোকেন গাজীপুরে’ শীর্ষক প্রতিবেদন ছাপা হয়। পরের দিন সোমবার জিএমপি কমিশনার মো. নাজমুল করিম খানকে রাস্তা বন্ধ করে কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
দুদকের কাছে লিখিত আবেদনের পাশাপাশি গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছেও আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী নাদিম মাহমুদ ও ইয়াছিন আলফাজ। এতে বলা হয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন সাপেক্ষে গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল করিম খানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের জন্য নিজ কর্মস্থলের কাছাকাছি সরকারি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হোক।
এসব বিষয়ে নাদিম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গত রোববার প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পরের দিন গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার ঢাকার গুলশানে থাকেন। তিনি গাজীপুর যাচ্ছেন রাস্তা বন্ধ করে। গাজীপুর থেকে ঢাকায় ফেরার পথে একইভাবে রাস্তা বন্ধ করছেন। ফলে এ সড়ক ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এমন কোনো আইন নেই, যার ভিত্তিতে কমিশনার রাস্তা বন্ধ করে জনগণকে ভোগান্তি দিতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে যাতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইজিপিকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
নাদিম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের ট্যাক্সের টাকায় গাজীপুর কমিশনার বেতন পান। কিন্তু তাঁর আচরণে মনে হচ্ছে না, তিনি জনগণের টাকায় বেতন পান। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সাদা রঙের যে প্রাডো গাড়িটি (ঢাকা ‘৬৯৪ শ’) ব্যবহার করছেন, তা তাঁর স্যালারির মধ্যে কাভার করছে না। ওই গাড়িটি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে এসেছে কি না, তা জনগণের কাছে কর্তৃপক্ষের খোলাসা করা দরকার।’