ডিবি পরিচয়ে ৪০ ভরি সোনাসহ ব্যবসায়ীকে অপহরণ, পালানোর সময় ধরা
ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজধানীর পোস্তাগোলা থেকে প্রায় ৪০ ভরি সোনার অলংকার, টাকাসহ সোনা ব্যবসায়ী তপন কুমার সাহাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয় একদল ডাকাত। পরে তাঁরা ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে যাওয়ার সময় পুলিশ চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে লুট করা প্রায় ৪০ ভরি সোনা ও প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. আলম (৬২), আলমগীর হোসেন (৩৯), পলাশ শেখ (৩৫) ও সাব্বির হোসেন (৩৪)।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরের সোনা ব্যবসায়ী তপন কুমার সাহা (৪২) পুরান ঢাকায় তাঁর মামার (প্রাণতোষ কর্মকার) সোনার কারখানায় তৈরি করা ৪০ ভরি ওজনের অলংকার এবং ৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ঋণ নেন। এগুলো নিয়ে তিনি ফরিদপুরে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে মুন্সিগঞ্জের মাওয়াঘাটের দিকে রওনা দেন। তপন পোস্তাগোলা সেতুতে ওঠার আগে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে ডাকাতেরা তাঁর অটোরিকশার গতিরোধ করে।
তপন কিছু বুঝে ওঠার আগে দুই ডাকাত মাইক্রোবাস থেকে নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তপনকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে ওঠায়। এ সময় মাইক্রোবাসে আরও চার-পাঁচজন ছিলেন। ডাকাতেরা সবাই মিলে সোনা ব্যবসায়ী তপনের হাত–পা ও চোখ বাঁধার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে তাঁরা তপনকে কিল–ঘুষি মেরে আহত করেন। তাঁরা সোনা ব্যবসায়ী তপনকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাভর্তি ব্যাগ ও তাঁর ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন জোরপূর্বক কেড়ে নেন।
চলন্ত গাড়িতে এসব ঘটনা ঘটতে থাকে। ঘটনাস্থলের ৫০ গজ দূরে যাওয়ার পর যানজট থাকায় ডাকাতেরা মাইক্রোবাসটি ঘুরিয়ে উল্টো পথে আসার সময় কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট সেটিকে থামার সংকেত দেন। ওই ট্রাফিক সদস্য গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান ও উল্টাপথে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তখন ডাকাত মাসুদ নিজেকে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দেন। সোনা ব্যবসায়ী তপন পুলিশ দেখে চিৎকার দিলে ডাকাতেরা পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মকর্তা ও শ্যামপুর থানার পুলিশ ধাওয়া করে আলম, আলমগীর হোসেন, পলাশ শেখ ও সাব্বির হোসেনকে আটক করলেও অপর ডাকাত মাসুদ পালিয়ে যান।
অভিযান তত্ত্বাবধানকারী পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মো. ইকবাল হোসাইন রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতদের কাছ থেকে লুট করা সব সোনার অলংকার ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, সেনাবাহিনীর মনোগ্রাম ও ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে। আটক ও পলাতক ডাকাতের বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় একটি ডাকাতির মামলা হয়েছে। ধরা পড়া চার ডাকাতকে ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পলাতক ডাকাত মাসুদকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।