‘বিশেষ চাবি’ দিয়ে ১০ সেকেন্ডে মোটরসাইকেল চুরি
মিঠুন ধর (২৯) এক সময় মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ করতেন। এ কাজের মজুরিতে তাঁর পোষাত না। একপর্যায়ে তাঁর মনে হয়, গাড়ি চুরি করলেই টাকা বেশি আসবে। এরপর কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তোলেন একটি চক্র। মিঠুনের নেতৃত্বে চক্রটি ‘বিশেষ চাবি’ দিয়ে ১০ সেকেন্ডে মোটরসাইকেল চুরি শুরু করে। সহজে যাতে ধরা না পড়ে, সে জন্য চুরির পরই মোটরসাইকেলগুলো দূরবর্তী স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে চক্রটি শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরের পুরোনো রেলস্টেশন এবং সন্দ্বীপ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মিঠুনসহ এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এসব তথ্য জানায়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে চুরি করা ২৪টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। চক্রটির প্রধান মিঠুনের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। গ্রেপ্তার চার সহযোগী সন্দ্বীপের মো. বাবর (৩৫), মো. শাহেদ (২৬) ও মো. রিপন (৪০) এবং লোহাগাড়ার মো. খোরশেদ আলম (২৯)।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ নগরে পুরোনো রেলস্টেশন এলাকা থেকে চক্রের প্রধান মিঠুন ও বাবরকে একটি মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরে ও সন্দ্বীপে অভিযান চালিয়ে বাকি ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে ২৪টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। চক্রটি নগর এবং আশপাশের এলাকায় এ পর্যন্ত শতাধিক মোটরসাইকেল চুরির কথা স্বীকার করেছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, মিঠুন ১১ মাস আগে জামিনে কারামুক্ত হওয়ার পর আবার চুরিতে জড়িয়ে পড়েন। চক্রটির কাছে ‘বিশেষ চাবি’ আছে। এই চাবি দিয়ে তাঁরা মোটরসাইকেলের লক (তালা) সহজে খুলতে পারেন। এ জন্য সময় প্রয়োজন মাত্র ১০ সেকেন্ড। মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো সন্দ্বীপ, কক্সবাজার ও বান্দরবানে পাঠিয়ে দিতেন। সহজে যাতে ধরা না পড়ে, এ জন্যই গাড়ি দূরবর্তী স্থানে পাঠাতেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, মিঠুন ধরের বিরুদ্ধে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া থানায় তিনটি করে চুরির মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বাবরের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি ও খুলশী থানায় দুটি মোটরসাইকেল চুরির মামলা আছে। এদিকে খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মোটরসাইকেল চুরির একটি মামলা আছে। চুরি বেশি করলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা মামলা না করায় এই চক্র ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যেত।