মূল আসামির ‘আশ্রয়দাতা’ সন্দেহভাজন আহসান উল্লাহ রিমান্ডে

আদালতে পুলিশ পাহারায় আহসান উল্লাহ। ২৯ ডিসেম্বরছবি: প্রথম আলো

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আহসান উল্লাহর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম সোহাগ এই আদেশ দেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আহসান উল্লাহ প্রধান আসামি মাদ্রাসার পরিচালক আল আমিনের আশ্রয়দাতা। ঘটনার পর সেদিন আল আমিন পালিয়ে তাঁর কাছে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি বেলা দেড়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ছিলেন। আহসান উল্লাহর মুঠোফোন নম্বর থেকে তিনি ছোট বোন রাবেয়াকে ফোন দেন।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে তিনটায় রাজধানীর ডেমরা থানার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে আহসান উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আসামিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম আদালতকে বলেন, প্রধান অভিযুক্ত আসামি আল আমিন ঘটনার পর আহসান উল্লাহর কাছে আশ্রয় নেন। তাঁরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। প্রধান আসামিকে শনাক্ত ও অন্য আসামিদের বের করার জন্য আহসান উল্লাহকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আসামি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আমি হকারি করতাম।’

পরে জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আল আমিনের সঙ্গে আহসান উল্লাহর পরিচয় কারাগারে।

আরও পড়ুন

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় ২৬ ডিসেম্বর সকালে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ভবনটির দুই পাশের দেয়াল উড়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক আল আমিন শেখ (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। সেখান থেকে ককটেলসদৃশ বস্তু, বিপুল রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।

পুলিশ বলছে, বছর তিনেক আগে বাড়িটি ভাড়া নেন মো. হারুনুর রশীদ। তিনি তাঁর বোন আছিয়া ও ভগ্নিপতি আল আমিন শেখকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন।

আরও পড়ুন

বিস্ফোরণের ঘটনায় গত শনিবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় সাতজনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে ৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন মাদ্রাসার পরিচালক আল আমিনের স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩০) ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমা (২৪), শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মুসা ওরফে ডিবা সুলতান (৩২), মো. আমিনুর ওরফে দরজি আমিন (৫০) ও মো. শাফিয়ার রহমান ফকির (৩৬)।