শিশু অপরাধের দায় বড়দের কতটুকু

বড়দের আচার–আচরণ, চলাফেরা বয়ঃসন্ধিক্ষণে কিশোরদের মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। তা ছাড়া তারা ডিভাইসনির্ভর হয়ে পড়ছে। অভিভাবকেরাও এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন।

বিশ্বে তিন ভাগের এক ভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশু–কিশোর। এর মাধ্যমে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে সংখ্যা নিতান্ত কম হবে না
ছবি: রয়টার্স

উজবেকিস্তানে ১৬ বছর বয়সে এক কিশোর চিকিৎসাবিজ্ঞান অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে পৃথিবীজুড়ে। চিকিৎসক হয়েই তিনি থেমে যাননি। প্লেটো, অ্যারিস্টটল, টলেমির দর্শন পড়তে শুরু করেন। ১৯ বছর বয়সে বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি, রাজনীতি, ইতিহাস, গণিতশাস্ত্র, জ্যামিতি, ন্যায়শাস্ত্র, কাব্য, সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে বিশেষ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।

মাত্র ২১ বছর বয়সে লেখেন আল মুজমেয়া নামের একটি বিশ্বকোষ। তাঁকে বলা হয় আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক। তাঁর বই ক্যানন অব মেডিসিন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে শত শত বছর ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ানো হচ্ছে। বইটি চিকিৎসাশাস্ত্রের বাইবেল নামে পরিচিত। সেই কিশোর পরিচিতি পান ইবনে সিনা বা আভেসিনা নামে।

২.

২৩ জুন ২০১৮। থাইল্যান্ডের ওয়াইল্ড বোয়ার নামে ১২ জনের কিশোর ফুটবল দল তাদের এক সদস্যের জন্মদিন পালন করতে থাম লুয়াং গুহায় বেড়াতে যায়। তারা গুহায় ঢোকার পরই বৃষ্টি শুরু হয়। পানি বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে গুহার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। ১০ হাজার ৩১৬ মিটার দীর্ঘ গুহায় আটকে পড়া কিশোর দল কোনোমতে খানিকটা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়। ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী এই শিশু ফুটবল দলের কোচ ভেতর থেকে যোগাযোগের কোনো উপায় না পেয়ে কিশোরদের কীভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায়—সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। ৯ দিন পর জানা গেল, শিশুরা জীবিত। ৯০ সদস্যের ডুবুরি দল কিশোরদের উদ্ধার করেন। তাদের সুস্থভাবে ফেরার পেছনে বিশ্ব মূল কৃতিত্ব দিয়েছে কোচকে।

শৈশবে বাবা-মা ও ভাইকে হারানো এই কোচ চাচার পরিবারে বড় হন। কৈশোরে সন্ন্যাসী হওয়ার প্রশিক্ষণ নেন, আয়ত্ত করেন ধ্যানচর্চা। জীবিকার তাগিদে স্থানীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচের চাকরি নেন। তাঁর এই ধ্যানশিক্ষাই গুহায় দারুণ কাজে দেয়। ধ্যানের মাধ্যমে কীভাবে শরীরিক ও মানসিক শক্তি ধরে রাখা যায়, তা শিশুদের শেখান তিনি। মূলত এর মাধ্যমে স্বল্প অক্সিজেনসমৃদ্ধ গুহায় শক্ত মনোবল নিয়ে টিকে ছিল শিশুরা। সমমর্মিতার দারুণ উদাহরণ সৃষ্টি করেন তিনি। নিজে না খেয়ে শিশুদের সঙ্গে থাকা সামান্য খাবার তাদের ভাগ করে খাওয়ান। তৃষ্ণার্ত শিশুদের গুহার দেয়ালের চুইয়ে পড়া ছড়ার পানি পান করতে শেখান। সেই কোচের নাম একাপল।

৩.

ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় জ্যোতির্বিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল শিশু রুবাব খান। রাজধানীর উদয়ন স্কুল থেকে এসএসসি ও নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের গ্রিনবেল্টে গবেষণাকেন্দ্র গোডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেয়। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার ওপর পড়াশোনার সুযোগ পান। সেখানে ২০০৮ সালে স্নাতক শেষ করেন। ২০১৪ সালে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার এই বিজ্ঞানী তাঁর দলকে নিয়ে সূর্যের চেয়ে কয়েক শ গুণ বড় পাঁচটি নক্ষত্রের সন্ধান পেয়েছেন। তিনি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বার্ষিক সভায় এ ঘোষণা দিয়ে সারা বিশ্বে তাক লাগিয়ে দেন।

আমাদের কিশোরেরা পারে না কেন

যে বয়সে একটি শিশু বা কিশোর অসম্ভবকে সম্ভব করার, পৃথিবী তথা সভ্যতাকে ঋণী করার মতো কাজের চিন্তা করতে পারে, হয়ে উঠতে পারে কল্যাণ, মহত্ত্ব ও সমর্মিতার দৃষ্টান্ত; সে বয়সী একটি শিশু বা কিশোরকে ভয়ানক অপরাধী কিংবা খুনি হিসেবে দেখতে কি আমরা আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি? সব কিশোর ইবনে সিনা, একাপল বা রুবাব হবে—এমনটা সমাজ আশা করে না। কিশোরদের কেউ কেউ অপরাধজগতে নাম লেখাবে, এটিও অস্বাভাবিক নয়। বয়সের চ্যালেঞ্জ, সমাজের প্রতিকূলতা, পরিবারের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে যে কিশোর ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে যায়, তার জীবন থেকে আমাদের কিশোরদের কি কিছুই নেওয়ার নেই? অবশ্য এসব মানুষ সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের কিশোরেরা জানে কি না, সেটিও বড় প্রশ্ন। এখন অভিভাবকদের প্রধান দুশ্চিন্তা—‘সন্তান খারাপ হয়ে যাচ্ছে, ভালো কিছু শিখতে চায় না।’

সমাজবিজ্ঞানী লেবেলিং থিওরির প্রবক্তা মিড ও কুলির মতে, এই ‘খারাপ’ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সন্তানকে ইঙ্গিত করে যত প্রচার করা হয়, তা সন্তানকে তত বেশি খারাপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। তাহলে কি খারাপকে খারাপ বলব না? আসলে খারাপকে খারাপ আখ্যা দিয়ে বা লেবেল মেরে ভালো করা যায় না। তাকে ভালো করতে হলে তার সামনে কৌশলে ভালোকে তুলে ধরতে হয়। পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র থেকে এসব করা হচ্ছে কি?

আমরা ‘বড়রা’ কতটুকু ভালো

সম্প্রতি শিক্ষক হত্যাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে শিশু বা কিশোরের ভূমিকায় শিশুর বয়সকে বড় একটি ‘ব্যাপার’ বলে মনে করা হচ্ছে। কীভাবে আমরা নিশ্চিত হচ্ছি, শিশুর বয়স ১৮–এর পরিবর্তে ১৪ করলেই তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা কমবে। অপরাধীকে কারাগারে ঢোকাতে পারলেই অপরাধমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যাবে? অপরাধ কি কেবল বয়সের সঙ্গে যুক্ত? শারীরিক-মানসিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘বড়’ হওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রবেশের সময় কিশোরেরা পরিবার-সমাজ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা-পরামর্শ পাচ্ছে না। এই বয়ঃসন্ধিক্ষণে সমাজসংসারে কাছের ও দূরের ‘বড়দের’ নানা দুষ্কর্ম তাদের অস্থিতিশীল ও প্রশ্নভরা মনে নানা প্রভাব ফেলে। তাদের বিপথে যাওয়ার জন্য এগুলো কোনো অংশেই কম দায়ী নয়।

সাম্প্রতিক কিশোর অপরাধের কিছু ঘটনার পর কিশোরদের সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্র বয়স কমানো, সমাজবিজ্ঞানীদের তাত্ত্বিক মতবাদ বিশ্লেষণ, পশ্চিমা ধ্যানধারণার আদলে পরামর্শ দানসহ নানা বিষয় আলোচনায় এসেছে। কিন্তু ভীষণ দরকারি দুটি বিষয় বরাবরের মতো উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে—আমরা যারা নিজেদের ‘বড়’ মনে করি, তাদের ত্রুটিপূর্ণ আচরণ এবং ভার্চ্যুয়াল জগতে শিশু-কিশোরদের মাত্রাতিরিক্ত বিচরণ।

সংসদে জনপ্রতিনিধিদের কথাবার্তা থেকে শুরু করে বাসা, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, মহল্লার অলিগলিতে বড়দের কথাবার্তা ও আচরণ থেকে শিশু–কিশোরেরা যে শেখে, সেটি হয়তো আমরা ভুলে যাই। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের লেখা থেকে উদ্ধৃত নিচের অংশটুকু পড়ে আমরা ‘বড়রা’ একটু আত্মমূল্যায়ন করতে পারি—

‘আমার মা আমাদের জন্য রান্না করতেন। তিনি সারা দিন প্রচুর পরিশ্রম করার পর রাতের খাবার তৈরি করতেন। তখন আমি ছোট। এক রাতে মা এক প্লেট সবজি আর একেবারে পুড়ে যাওয়া রুটি বাবাকে খেতে দিলেন। আমি অপেক্ষা করছিলাম, বাবার প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, সেটা দেখার জন্য। কিন্তু বাবা চুপচাপ রুটিটা খেয়ে নিলেন এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, স্কুলে আমার আজকের দিনটা কেমন গেছে। আমার মনে নেই বাবাকে সেদিন আমি কী উত্তর দিয়েছিলাম, কিন্তু এটা মনে আছে, মা পোড়া রুটি খেতে দেওয়ার জন্য বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। উত্তরে বাবা মাকে যা বলেছিলেন, সেটা আমি কোনো দিন ভুলব না।

বাবা বলেছিলেন, ‘প্রিয়তমা, পোড়া রুটিই আমার পছন্দ’। শুতে যাওয়ার আগে আমি যখন বাবাকে শুভরাত্রি বলে চুমু খেতে গিয়েছিলাম, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কি আসলেই পোড়া রুটিটা পছন্দ করেছিলেন কি না। বাবা আমাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তোমার মা আজ সারা দিন অনেক পরিশ্রম করেছেন এবং তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। তা ছাড়া একটা পোড়া রুটি খেয়ে মানুষ কষ্ট পায় না; বরং মানুষ কষ্ট পায় কর্কশ ও নিষ্ঠুর কথায়।’

কজন স্বামী তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে এবং কজন স্ত্রী তাঁর স্বামী সম্পর্কে সন্তানের সামনে এ রকম শ্রদ্ধাপূর্ণ ও মমতাময় মন্তব্য করেন, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন বৈকি। বড়রা এমন সুন্দর আচরণ করলে তা থেকে কেন সন্তান শিখতে পারে না, সেটিও ভাবা দরকার। আসলে শেখার জন্য যে আগ্রহ ও মনোযোগ দরকার, সেটি কেড়ে নিচ্ছে অন্য কিছু—তা কি আমরা জানি?

ডিভাইস বাড়ায় দূরত্ব, কমায় মমত্ব, শেখায় অপরাধ

আমাদের সন্তানেরা চায়, অভিভাবকেরা সরবরাহ করেন। আদর করে সন্তানের হাতে ডিভাইস তুলে দেন, দেন না শুদ্ধাচার ও নৈতিক শিক্ষা। ফলে কিশোরদের জীবন আজ ডিভাইসনির্ভর হয়েছে। কী খাচ্ছি থেকে কী ত্যাগ করছি পর্যন্ত সবকিছুর তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট না দিলে জীবন হয় পানসে। ভার্চ্যুয়াল ভাইরাসে পূর্ণ ডিভাইসটি কিশোরদের বড় একটি অংশকে মানুষের বদলে যন্ত্রে পরিণত করছে। অনেক অভিভাবক একে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন। এমনকি সন্তানের জীবনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও অনেক অভিভাবকের হুঁশ হয় না।

মাদাগাস্কারে ১৭ বছরের এক কিশোরী পরীক্ষায় ভালো নম্বরপ্রাপ্তির লোভে কীভাবে ভার্চ্যুয়াল জগতের অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও চরম বিপদে পড়েছে, তার খানিকটা তুলে ধরা হয়েছে ইউনিসেফের ২০১৭ সালের একটি প্রতিবেদনে। উদ্ধার হওয়ার পর ওই শিক্ষার্থী বলেছে, ‘আমার মা-বাবা জানতই না, আমি অপরিচিত সব মানুষের সঙ্গে কথা বলছি (পৃ. ২৫)। আমি কোনো পথনির্দেশনা পেলে এমনটি হতো না।’ বাংলাদেশের শিশু–কিশোরদের অনলাইন আসক্তি ও এর নির্মম শিকার হওয়ার অজস্র ঘটনা এখানে নাই–বা আনলাম।

বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশু। এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সে সংখ্যা নিতান্তই কম হবে না। গত জানুয়ারিতে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে অনলাইনে শিশু যৌন নিগ্রহের রেকর্ড সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ৭ থেকে ১০ বছরের শিশুদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, এই শিশু-কিশোরদের বড় একটি অংশ বড়দের কাছ থেকে কল্যাণমূলক কাজে ইন্টারনেট তথা ডিভাইসকে ব্যবহারের পরামর্শ পায় না।

ডিভাইসনির্ভরতা আত্মবিশ্বাসকে দোদুল্যমানতায়, মেধাকে অনিষ্টকর চিন্তায়, পরিশ্রমের মানসিকতাকে আলস্যে, জ্ঞান অর্জনের আগ্রহকে শুধু স্ক্রল ও পাঠ্যসূচিতে চোখ বুলিয়ে যাওয়ায়, সংবেদনশীল-দরদি মনকে ভয়ানক সহিংসতা ও ক্রোধে, সমমর্মিতাকে নিষ্ঠুরতায় পরিণত করছে। অপরাধ করেও তাদের বলতে বাধে না, ‘করেছি তো কী হয়েছে।’

অন্যের ভালো কাজ ও সদাচরণ অনুসরণের মাধ্যমে নিজেকে ভালো করার বদলে ভার্চ্যুয়াল জগতের বিভ্রান্তিকর ও অকল্যাণকর বিষয়গুলোই তাদের টানে বেশি। পাশের বাড়ির অসুস্থ প্রতিবেশীর খোঁজ নেওয়ার বদলে অজানা, অদেখা বন্ধুর পার্টির গল্প শোনাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। তারা দিতে নয়, পেতে শেখে। ক্ষমা নয়, প্রতিশোধ নিতে শেখে। সুখ খোঁজে অকল্যাণ, অস্থিরতা আর হঠকারিতার মধ্যে; আর ক্রমে অসুখী-অস্থির হয়ে ওঠে।

২১ জুন ঢাকায় শিশু-কিশোরদের একটি অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলছিলেন, মানুষ যখন সারা দিনের কাজের মধ্যে অন্যের জন্য অন্তত একটি কল্যাণকর কাজ করে, তখন সে সবচেয়ে সুখী হয়। আমাদের শিশু-কিশোরদের কল্যাণকর কাজে যত সম্পৃক্ত করা যাবে, তত তাদের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা কমবে।

কাজেই শিশু-কিশোরদের বয়স কমিয়ে অপরাধ কমানোর মতো দুর্বল চিন্তায় মন না দিয়ে তাদের সুখী হওয়ার রাস্তাটা বাতলে দিতে হবে। তাহলে ইবনে সিনা বা একাপল না হলেও কিশোরদের অন্তত নিজেদের ও অন্যের ভালো করার মতো মন তৈরি হবে।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ; সদস্য, সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।